পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় অপ্রকাশিত দিনলিপি.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুখবন্ধ সব মুখবন্ধই বোধ হয়। হৃদয়োমুখ। মুখের নয়, হ্যায়ের কথা । না হলে, সত্যিই কি লেখার দরকার ছিল ? কতকগুলি ব্যষ্টিটি বা সমষ্টির প্রতি ঋণস্বীকারে ঋণ কি শেষ হয়ে যায় ? r আমার হয়নি । এই বই লিখতে শিহু লেখাই বাহুল্য, আনন্দ তো পেয়েছি প্রচুরই, সেই সঙ্গে মিলেছে। অস্থির এক বিস্ময় আর শঙ্কাতুর এক সংশয় । যন্ত্রের তাড়নায় হোক আর অন্তরের প্রেরণাই হোক সব লেখককেই পরিণামে সন্তুষ্ট, সমাহিত হতে হয় ; নইলে পাঠকের ওপর তঁার প্রভুত্ব বা প্রিয়তা কোথায় ? এর শেষ বিচারের আশায়। ভবভূতি থেকে ভবিষ্যৎ সবাই বসে আছেন। আমার অভীষ্ট আমার দেবতা । পাতায় পাতায় বইয়ের বিপুলতা বেড়েছে। কেমন করে বাড়ল, কখন বাড়ল, আমার ভাল করে মনে পড়ে না । তার বড় কারণ বোধ হয়, আরও এক বিপুলতার আবিস্মরণীয় স্পর্শ আমি পেয়েছি। অবিস্মরণীয়কে নিয়েই আমার অপরিসীম বিস্ময় আর সংশয় । মনে হয়েছে, এ কি গ্ৰন্থ না মনুষ্যহাদয়গ্ৰন্থ ? প্রয়োজনের উপলক্ষকে কতবার অতিক্রম করে সে এক মনুষ্য মহাদেশে গিয়ে পৌচেছে যেখানে স্তব্ধ, পরিমুঢ় বোধ না করে পারিনি। এত অজস্র দান ! এত যাচিত-অযাচিত সাহায্য ! বড়কে মনে করে রাখতে তত উদ্বিগ্ন বোধ করিনি, যত করেছি। এই নামগোত্ৰহীন মনুষ্য জনপদকে । এদের কারও স্বীকৃতি হয়ত অগোচরেই রয়ে গেল নামহীন স্মৃতিসুখ হয়ে। সে আমার অনায়ত্ত ব্যর্থতা, পরিণামহীন অনুশোচনা। উচ্চ-তুচ্ছ, মহৎ-মধ্যম। র্যারা এই রচনার চারপাশে সহায়তার সামান্যও উপচার নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন স্মরণে-বিস্মরণে আমি তাদের সবাইকে প্ৰণাম জানাই। প্ৰণাম্যের সুবিশাল প্ৰান্তদেশে যেমন আমার আচার্য ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ড সুকুমার সেন, পরম শ্ৰদ্ধেয় ড রমেশচন্দ্র মজুমদার, ড. দীনেশচন্দ্ৰ সরকার, ড. নীহাররঞ্জন রায়, ড. রবীন্দ্ৰকুমার দাশগুপ্ত, ড রামারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন-উপাচাৰ্য হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, নীরদচন্দ্ৰ চৌধুরী, নীরদরঞ্জন দাশগুপ্ত, পরিমল গোস্বামী, মণীন্দ্রলাল বসু, লীলা মজুমদার, এমন আরও কত জ্ঞানীগুণিজন তেমনি অপর প্রান্তে নামহীন এক মুদির দোকানের মালিক, মোক্তার,