পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাপালী-বেী ঘাড় নেড়ে বললে-না:-- -বডড পেট-আলগা তুই, পেটে কোনো কথা থাকে না—কেন, কবে আমি কাকে কি বলিচি ? -সে হিসেব এখন বসে বসে দেবার সময় নেই-মোটের ওপর একথা ক’রে কাছে - কোন কথা ? মেটে আলুর কথা ? -আবার ন্যাকামি হচ্চে ? দ্যাখ, ছুটুকি, তুই কিন্তু দেখবি মজা আমার হাতে আজ। তুমি বুঝতে পারচাে না কোন কথা ?--নেকু ! কাপালী-বেী আবার হি-হি করে হোসে ফেললে—কি কারণে কে জানে। অনঙ্গ-বেী বললে-এ পাগলকে নিয়ে আমি এখন কি করি ? তুই বলবি छैिक-ना ? কােপালী-বেী হাসি থামিয়ে আশ্বাস দেওয়ার সুরে বললে-পাগল বামুনদিদি ? তোমায় নিয়ে যখন কথা, তখন জেনো, কাগ পক্ষিতেও একথা টের পাবে না । মাথার ওপর চন্দ্ৰ-সুয্যি নেই ? বাড়ী এসে আলুব ভাগ নিয়ে চলে গেল যে যার ঘরে । গঙ্গাচরণ বেরিয়েছিল চাল যোগাড়ের চেষ্টায়। কিন্তু ন’হাটার হাটে ঘোর দাঙ্গা আর লুটপাট হয়ে গিয়েচে-চালের দোকানে । পুলিস এসে অনেক লোককে ধরে নিয়ে গিয়েচে । গঙ্গাচরণ বর্ণনা করে স্ত্রীর কাছে বসে সন্ধ্যার পরে । অনঙ্গ-বেী বললে-এখন উপায় ? -উপবাস । অনঙ্গ-বেী দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলে সে উপোস করতে ভয় পায় না, উপোস কি করে নি। এর মধ্যে ? কিন্তু এই যে উনি শুকনো মুখে এত দূর থেকে এসেচেন ফিরে, ওঁকে এখন সে কি খেতে দেবে ওই মেটে আলু সিদ্ধ ছাড়া ? বাধ্য হয়ে দিতে হলো তাই। শুধু মেটে আলু সিদ্ধ। এক তাল মেটে আলু সিদ্ধ। সবাইকে তাই খেতে হলো ৷ দীনু ভট্টচাষ সম্প্রতি বাড়ী গিয়েচে । তবুও আলু সিদ্ধ খানিকটা বাঁচবে। হাবু খেতে বসে বললে—এ মুখে ভালো G5 o T অনঙ্গ বললে-এ ছেলের চাল দ্যাখ না ? মুখে ভালো না লাগলে করাচি কি ? মতি মুচিনী খেতে এল না, কারণ সে ভাগের ভাগ আলু নিয়ে গিয়েচে, আলাদা করে আলু সিদ্ধ বা আলু পোড়া খেয়েচে ।

  • }(t