পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—সবাই তো বলচে। যুদ্ধর দরুন নাকি এমন হচ্চে —কার সঙ্গে যুদ্ধ, বেধেচে গো ? -সে সব তুমি বুঝতে পারবে না। আমাদের রাজার সঙ্গে জার্মানি আর জাপানের-সব জিনিস নাকি আক্রা হয়ে উঠবে। --হোক, গে, আমাদের তো অর্ধেক জিনিস কিনে খেতে হয় না । তবে চালটা যদি বেড়ে যায় --সেই কথাই তো ভাবচি সেদিন বিকেলে বিশ্বাস মশায়ের বাড়ী বসে এই সব কথার আলোচনা হচ্ছিল । বিশ্বাস মশাই বললেন-আমাদের ভাবনা কি ? ঘরে আমার দু’গোলা ধান বোঝাই, দেখা যাবে এর পরে । বুদ্ধ নবদ্বীপ ঘোষাল বললে-এ সব হাংগামা কতদিনে মিটবে ঠাকুর মশাই ? শুনাচি নাকি কি একটা পুব জারমান নিয়ে নিয়েচে ? বিশ্বাস মশায় বললেন- সিঙ্গাপুরনবদ্বীপ বললে-সে কোন জেলা ? আমাদের এই যশোর, না খুলনে ? মামুদপুরের কাছে ? বিশ্বাস মশায় হেসে বললেন-- যশোরও না, খুলনেও না । সে হলো সমুদ্রের ধারে। বোধ হয়। পুরীর কাছে, মেদিনীপুর জেলা। তাই না পণ্ডিত মশাই ? গঙ্গাচৰণ ভালো জানে না, কিন্তু এদের সামনে অজ্ঞতাটা দেখানো যুক্তিযুক্ত নয়। সুতরাং সে বললে-ই। একটু দূরে-পশ্চিম দিকে । ঠিক কাছে নয় । নবদ্বীপ বললে-পুরীর কাছে ? আমার মা একবার পুরী গিয়েছিলেন। পুৱী, সাক্ষীগোপাল, ভুবনেশ্বর। সে বুঝি মেদিনীপুর জেলা ? বিশ্বাস মশায় বললেন-হঁ্যা । ভৌগোলিক আলোচনা শেষ হলে যে যার বাড়ীর দিকে চলে গেল। গঙ্গাচরণ পাঠশালায় বসে। পরদিন ছেলেদের জিজ্ঞেস করলে-এই, সিঙ্গাপুর কোথায় জানিস ? কেউ বলতে পারলে না, কেউ নামই শোনে নি । VSV