পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

! গঙ্গাচরণ হেসে কান চেপে ধরে বললে-এই দিলাম। একটু বেলা হলে অনঙ্গ-বীে রান্না চড়ালে, তার পরে মনে মনে হিসেব করে দেখলে দিন দশ বারো পরে চাল একেবারে ফুরিয়ে যাবে তখন উপায় কি হবে ? চাল নাকি হাটে পাওয়া যাচ্চে না। সবাই বলচে। তার স্বামী নির্বিরোধী মানুষ, কোথা থেকে কি যোগাড় করবে। এ দুদিনে, ভাবলে भांशों श् । কােপালীদের ছোট-বৌ চুপি চুপি এসে বললে-বামুন-দিদি, একটা কথা বলবো ? এক খুচি চাল ধার দিতি পারো ? --মুশকিল করলি ছোট-বেী। তোদের চাল কি বাড়ন্ত ? --মোটে নেই। কাল ছোলা সেদ্ধ খেয়ে সব আছে। না হয় ছোট ছেলেটিকে দু’টি ভাত দিও এখন দিদি। আমরা যা হয় করবো এখন । অনঙ্গ-বৌ কি ভেবে বললে-একটু দাড়া। এসেচিস যখন তখন নিয়ে যা এক খুচি চাল। ওতে আমাদেব কতদিনের সাশ্রয় বা হতো ? কােপালী বৌ চাল আঁচল পেতে নিয়ে বললে—এক জায়গায় কচুর শাক আছে তুলতে যাবে বামুন-দিদি ? গোরামে তো কচুর শাক নেই।--যে যেখান থেকে পারচে তুলে নিয়ে যাচ্চে। গাঙের ধারে এক জায়গায় সন্ধান করিচি, চেব কচুব শাক হয়ে আছে। দুজনে চলো চুপি চুপি তুলে আনি। -চল, আজ দুপুরে যাবো। চাল তো নেই। যা দেখচি ওই খেয়েই থাকতে হবে দু’দিন পরে। কােপালী-বোঁ হেসে বুড়ো আঙুল তুলে নাচিয়ে বললে—লবডঙ্কা! তাই বা কোথায় পাচ্চ বামুন-দিদি ? কাওবা পাড়ার মাগী-মিন্সে এসে গাঙের ধারের যত সুষনি শাক, কলমি শাক, হেলেঞ্চ শাক তুলে উজোড করে নিয়ে যাচ্চে দিনরাত। গিয়ে দ্যাখো গে। কোথাও নেই। আমি কি খোজ করি নি বামুনদিদি ? ওই খেয়ে আজ দু’দিন বেঁচে আছি-ওই সব শাক আর ছোলা সেদ্ধ। তোমার কাছে মিথ্যে কথা বলে বড়াই করে কি করবো ? বিশ্বাস মশায়ের বাড়ী মিটিং বসেচে। বর্তমান সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্যেই মিটিং, তবে কাপালীপাড়ার লোক ছাড়া অন্য কোনো লোক এতে উপস্থিত নেই। ক্ষেত্রে কাপোলী বললে-এখন ধান আমাদের দেবেন। কিনা বলুন বিশ্বেস মশায়। ዓwo