পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান یی) می( বৃন্দাবনের যমুনাতট না দেখলে প্রায় তেমনি অবস্থাপ্রাপ্তি ঘটতো। বৃন্দাবনের মত স্থানে এলে অনিষ্ট হয় না, কৃষ্ণে আসক্তি তো আত্মার ইষ্টই করে, উধবলোকে নিয়ে যায়। বৈষ্ণব সাধু বল্পেন—কৃষ্ণে আসক্তি কৃষ্ণপদে মতি এনে দেয়। হরিদাস স্বামী কি বলেছিলেন সপ্তগ্রামে মনে নেই ? 尊 ক্ষেমদাস বল্লেন—শুনেচি বটে। তবে মনে রাখবেন, আমি কবি ছিলাম, ভক্ত ছিলাম না আপনাদের মত। আপনার ছিলেন শ্রীচৈতন্যের পাশ্বচর, অপেনাদের মত ভাগ্য আমি করি নি। আমার কৃষ্ণ বিশ্বের বনে বঁাশি বাজিয়ে বেড়ান, বালকস্বভাব—উদাস ; কেউ যদি ডাকে তার কাছে যান, ন ডাকলে আপন মনেই একা একা থাকেন। অনাদিকাল থেকে এমনি । তাকে যদি ভালবেসে কেউ ডাকে, তবে তিনি সঙ্গী পেয়ে খুশি হন—তিনি করুণস্বভাব, ভালবাসার বশ । 曼 পুষ্প বল্লে—কেন একা থাকেন ? রাধা কোথায় ? —ও সব কল্পনা । এই সব ভক্তপ্রভুরা বানিয়েছেন। কে রাধা ? যে নারী ভালৰাসে তাকে, সে-ই রাধা । সে-ই তার নিত্যলীলার সহচরী। মীরাবাঈ যেমন । —মীরাবাঈ আছেন ? —আছেন। তারা নিত্যলীলার সহচরী ভগবানের—যাবেন কোথায় ? বহু পুণ্যে তাদের দর্শন মেলে। বহু উধ্বলোকে ওঁদের অবস্থিতি । আবার বিশ্ব ব্যেপে ওঁদের অবস্থান, তাও বলতে পারো। পৃথিবীর ব্যক্তিত্ব র্তার নষ্ট হয়ে গিয়েচে বহুকাল, ও তো স্থল দেহ ধরে লীলা করবার জন্তে যাওয়া। ওটা কিছু নয়। পৃথিবীর সেই মীরাবাঈকে কোথাও পাবে না। আছেন খাটি তিনি—অর্থাৎ যে শুদ্ধ, বুদ্ধ, চৈতন্যস্বরূপ আত্মা মীরাবাঈ সেজে অবতীর্ণ হয়েছিলেন দুদিনের জন্যে, তিনি আছেন । ... • যতীন বলে উঠলো—তাই আপনার মত একজন কবি বলেচেন—All the world's a atage, and the men and women merely players—offs— ক্ষেমদাস মৃদু হেসে বল্পেন—বুঝেচি । গভীর সত্যবাণী । নানাদিক থেকে সত্য-নানাভাবে । যতীন একটু বিস্ময়ের স্বরে বল্লে—আপনি কি ইংরেজি জানেন ? -- ভাষার সাহায্যে বুঝিনি, তোমার মনের চিন্তা থেকে ও উক্তির অর্থ বুঝেচি। ওঁর সঙ্গে আমার দেখাও হয়েছে। পঞ্চম স্তরে কবি-সম্মেলন হয়, সেখানে পৃথিবীর সব দেশের বড় বড় কবি আসেন— • ... • @ যতীন ব্যাকুল আগ্রহের স্বরে বল্পে, আপনি কালিদাসকে দেখেছেন ? ভবভূতি ? —সে সৌভাগ্য আমার হয়েচে । পৃথিবীর সে কালিদাস নয়—যে নিত্য মুক্ত কবিআত্মা কালিদাসরূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন, সেই আত্মার সঙ্গে আমার পরিচয় । একবার নয়, অনেকবার নানা দেশে নানা প্রাকৃত দেহ ধারণ করে তিনি অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু আসলে তিনি অপ্রাকৃত দেহধারী চিদানন্দময় আত্মা ; আজ নাম কালিদাস, কাল নাম চণ্ডীদাস, পরে ক্ষেমদাস —তাতে কি ?