পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Soğ বিভূতি-রচনাবলী আভাস । পুপ চুপি চুপি দেবীকে জিজ্ঞেস করলে—আচ্ছা, উনি কে ? এই অদ্ভুত দেবতা ? —উনি ? • পরে হেসে দেবতার দিকে চেয়ে বরেন—এইবার ওদের বলি ? বলেই চুপ করে গেলেন। পুষ্প বিস্ময়ের সঙ্গে বল্লে—আমাদের সঙ্গে এমন ভাবে মিশচেন ! এত বড় উনি ! অথচ– দেবতা এবার হেসে এগিয়ে এসে বল্পেন—মানুষ কি কীট ? তোমরাও তিনি । তোমাদের ঋষিরাই বলেচেন—কিঞ্চাহং ন তু ত্বাং ভূতাবৎ যাচে, যোহসৌ আদিত্যমণ্ডলস্থে ব্যাহতাবয়ব: পুরুষঃ সোহহং ভবামি—আমি ভৃত্যভাবে তোমার সাক্ষাৎকার যাজ্ঞা করচিনে—সবিতৃমগুলে যে ওস্কারময় পুরুষ, আমিই সেই । তুমি আমি ভিন্ন কোথায় ? ছোট ভাবে কেন, তাই তো ছোট হয়ে থাকে । বড় হও, বীর্যবান হও । সচেতন হয়ে যদি তোমরা আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও দাড়াও বিদ্রোহের পথে—সেও ভাল । তার দ্বারা শক্তি অর্জন করবে। ষে দুর্বল, তার দ্বারা কি কাজ হবে ? যে শক্তিমান, অথচ বিদ্রোহী—তাকে ঠিক পথে নিয়ে আসতে আমরা জানি । যতীন কৌতুহলের সঙ্গে বল্লে—এই যে যুদ্ধ, জাতিতে জাতিতে রক্তারক্তি,-এও কি আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী ? 編 —তুমি বুঝতে পারলে না। প্রত্যেক ঘটনা মানুষকে উন্নতির পথে নিয়ে যায়। যুদ্ধে জাতিতে জাতিতে সংঘর্ষ—এর দ্বারা জাতি শক্তিমান হয়। কি হয় যুদ্ধে ? মানুষ মারা যায়। মানুষের আরামের ব্যাঘাত ঘটে । এই তো ? কিন্তু মৃত্যুর অসত্যতা এতদিনে তুমি নিশ্চয় বুঝেছ। আরামের অত্যন্ত হযোগ মানুষকে অলস, পশুবৎ করে তোলে। আমার পৃথিবী কতকগুলি আরামপ্রিয়, রোমন্থনকারী, নিজের অবস্থায় মহাপরিতুষ্ট গোরুর দলে ভ'রে তুলতে আমি চাইনে। শক্তিমান হয়ে উঠুক সব। কে কা’কে মারচে ? সব মিথ্যে । দুদিনের আরাম কিসের? অনস্ত বিশ্ব তোমাদের পায়ের তলায় । সংকল্পাদেব তৎশ্রতে, যা যখন ভাববে, মুক্ত পুরুষে তাই তখন পায় । পৃথিবীর স্থল বাসন কামনাকে জয় করো—আরামের ইচ্ছা মন থেকে তাড়াও । নয়তো ঘুমিয়ে পড়বে। করুণদেবী বল্লেন--এদের বৃহস্পতি গ্রহের দুই উপগ্রহে নিয়ে গিয়ে দেখিয়ে দাও না ? —দেখাবো । সে দুটো ধীরগামী জগৎ, যারা পৃথিবীতে সুবিধেমত উন্নতি করতে পারচে না, আমরা তাদের ওই সব মন্থরগতি জগতে পাঠিয়ে দিই জন্ম নিতে । সেখানে গেলে আশ্চর্য ব্যাপার দেখবে । r করুণাদেবী বল্লেন –ওদের এখুনি নিয়ে গিয়ে দেখিয়ে দিই— আবার মানস-সরোবর ও হিমালয় ওদের পায়ের তলায় দেখতে দেখতে মিলিয়ে গেল। আবার অসীম •ব্যোম—অন্ধকারে ডুবে পৃথিবী দিগন্তহীন আকাশে অদৃশু হোল। আকাশের অদ্ভুত দৃপ্ত, নিমানে সব দিক নক্ষত্রযুক্ত।