পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SQર বিভূতি-রচনাবলী হ্যাগে, তুমি ঠিক তো ?. পরে ব্যস্ত হয়ে বল্পে—দাড়াও, একটা প্রণাম করে নিই তোমায়— প্ৰণাম করে উঠে বল্লে-কতকাল দেখিনি। ছিলে কোথায় । সংসার যে ছারেখারে গেল, বাড়ী ধরদোরের অবস্থা এ কি হয়েচে ! আমি এতকাল আসিনি। বাপের বাড়ী থেকে আমাকে আনলেও না। নিজেও ভবঘুরে হয়ে বেড়াচ্চ । ছেলেমেয়ে দুটোর কথাও তো ভাবতে হয় । যতীন সস্নেহ কষ্ঠে বল্পে ঠিক, ঠিক। তুমি ভাল আছ আশা ? - --আমি ভাল নেই। —কেন, কি হয়েচে ? অাশা, আমায় খুলে বলো সব— —মাথার মধ্যে সব গোলমাল। কিছু বুঝতে পারিনে। সব স্বপ্ন বলে মনে হয় । কত কি ধে ঘটে গেল জীবনে, বুঝিনে কোনটা স্বপ্ন কোনটা সত্যি। এই তুমি দাড়িয়ে আছ সামনে, আমার যেন কেমন মনে হচ্চে । যেন মনে হচ্চে কে বলেছিল, তুমি—না ছি, সে কথা বলতে নেই। —আশা, আবার ঘর সংসার পাতাই এসো— —পাততেই হবে। আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েচে—এক জায়গায় ছিলাম, মরুভূমি আর পাহাড়, লোক নেই জন নেই, কি ভয়ানক জায়গা। সেখানে যেন এক দেবীর সঙ্গে দেখা হোল, তার কপাল দ্বিয়ে আগুনের মত হলকা বেরুচ্চে। কি তেজ ! বাবাঃ—কি রকম সব ব্যাপার। ও সব স্বপ্ন, কি বলো ? —নিশ্চয়ই, আশা । —তুমি এলে ভালই হোল। ঘরদোর বাটপাট দিই। উলুনগুলো ভেঙে জঙ্গল হয়ে গিয়েচে । চড়ুই পাখীর বাসা হয়েছে কড়িকাঠে। হাটধাজার করে এনে দাও। সেই মরুভূমির মত জায়গা থেকে কে যেন আমায় এখানে টেনে নিয়ে এল । থাকতে পায়লাম না . পরে কাছে এসে অপরাধীর মুরে বল্পে—হঁ্যাগো, আমায় বাপের বাড়ীতে ফেলে রেখেছিলে কেন এতদিন ? রাগ করেছিলে বুঝি ? যতীন স্নেহপূর্ণ দৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়ে রইল, সে দৃষ্টিতে গভীর অমুকম্পী, অতলম্পর্শ অনুকম্পা—সর্ববাসনাশূন্ত উদার ক্ষমা-কোনো কথা বল্লে না। আশা মুগ্ধদৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়ে হাসি-হাসি মুখে বল্লে—বেশ চেহারা হয়েচে তোমার। হঠাৎ আশা চীৎকার করে উঠলো—একি ! ওমা, একি হোল! কোথায় গেলে গো ? এই যে ছিলে ? ওমা এ সব কি ! 曼 蠟 যতীন বুঝলে সে অদৃপ্ত হয়ে গিয়েচে আশার কাছে। পৃথিবীতে কতক্ষণ সে থাকবে, পৃথিবীর আসক্তি ও চিন্তায় তার দেহ স্থূলস্তরের দর্শনযোগ্য হয়েছিল অল্প সময়ের জন্তে, ওর চিন্তার প্রবল আকর্ষণ নরক থেকে আশাকে এনেছিল এখানে। আশাও আর থাকতে পারবে না। এখুনি ওকে চলে যেতে হবে । উভয় স্তরে জীবের কোন যোগাযোগ নেই। রামলাল পর্যন্ত এসে যতীনকে আর দেখতে পেলে না। যতীনের দেহ আবার তৃতীয়