বিভূতি-রচনাবলী 98אל বছরের মধ্যে তিনবার নীচে নেমে গিয়েছিলেন ভারতের লোকালয়ে । একবার নেমে শুনলেন শঙ্করাচার্য ব্রাহ্মণ্যধর্ম পুনুপ্রতিষ্ঠিত করচেন। দ্বিতীয়বার নামলেন অনেকদিন পরে ; নামতে নামতে শুনলেন যবনেরা ভারতে প্রবেশ করেচে —শুনে আর না নেমে গিয়ে উঠে নিজের জাসনে চলে গেলেন, অনেকদিন আর নামেন নি । * পুষ্প ও যতীন রুদ্ধকণ্ঠে শুনছিল । পুষ্প অধীর কৌতুহলের সঙ্গে জিজ্ঞেস করলে—জার একবার কখন নেমেছিলেন ? —আমি তখন এ জন্মের পরেও দেহত্যাগ করেচি--এই সেদিন, পৃথিবীর হিসেবে বড়জোর সত্তর আশি বছর হবে । বড় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল ভারতব্যাপী, আমরা অনেকে দলবদ্ধ হয়ে নেমে যাই ভারতে যদি কোন প্রতিকার করতে পারি। ওঁকেও নিয়েছিলাম আমাদের সঙ্গে । কুম্ভমেলা সেবার প্রয়াগে । উনি মেলা দর্শন করে দশদিন থেকে ওপরে উঠে যান—সেই শেষ, আর লোকালয়ে যান নি । t ক্ষেমদাস প্রশ্ন করলেন—এখনও দেহে রয়েচেন কেন ? —যোগ-প্রক্রিয়ায় দেহ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে গিয়েচে, তাই দেহ ধারণ করেই আছেন । বাসনাকামনা-পূন্ত মুক্তপুরুষ তিনি, দেহে থাকাও যা, দেহে না থাকলেও তা। তার পক্ষে সব সমান। স্বেচ্ছাক্রমে বিশ্বের সর্বত্র তার অবাধ গতি, ব্ৰহ্মলোক পর্যন্ত । আমিও তাকে বলেছিলাম—আর দেহে কেন ? উনি বল্লেন—হাম্ তো আত্মানন্দ আত্মারাম, হামারা ওয়াস্তে যো হায় ব্রহ্মলোক, সো মেরা হিমবান, মেরা আসন । এহি পর পরমাত্মা বিরাজমান হায় । লোকালোক তো अग्नि ক্ষেমদাস বল্পেন—হঁ্যা, ওসব অনেক উচ্চ অবস্থার কথা। আমাদের জন্যে নয় ওসব । আমরা ভগবানের স্বষ্টির মধ্যে আনন্দ পাই, এই অপূর্ব সৌন্দর্যরসের আস্বাদ করবে কে আমরা ছাড়া ? তোমরা তো ব্ৰহ্ম হয়ে বুড়ি ছয়ে বুড়ি হয়ে বসে আছ । .পুপ কুষ্ঠার সঙ্গে প্রশ্ন করলে—প্ৰভু, আমাদের একবার সেই সাধুর কাছে নিয়ে গিয়ে দেখাবেন ? সন্ন্যাসী বল্লেন—ন মা । তিনি লোকের ভিড় পছন্দ করেন না। তবে চলে আমার পূর্বজন্মের আর একটি গুরুভগ্নীর কাছে তোমায় নিয়ে যাবো—তিনিও আজ পর্যন্ত দেহে আছেম। গভীর বনের মধ্যে গুপ্তভাবে থাকেন—প্রায় সময়ই সমাধিস্থ থাকেন। চলে হে কবি, সমাধি দেখলে তোমার জাত যাবে না— 酸 ক্ষেমদাস বল্পেন—না হে, আমি যাবে না। তুমি এদের নিয়ে যাও—আমার ও ধর্ম নয়। কবির ধর্ম স্বতন্ত্ৰ । সন্ন্যাসী হেসে এসে ক্ষেমাসের হাত ধরে বল্পেন-ভগবানের মহিমা সর্বত্র। কেন যাবে না ? চলো- • * --বেশ, তাহলে তুমি কৰা দাও আমার সঙ্গে ভক্ত বৈষ্ণবের আশ্রমে স্বাবে ? যদি দেখাতে পারি সেখানে ? প্রেমভক্তি নেবে ? . .
