পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@b" - বিভূতি-রচনাবলী ষা কিছু জমিজমা আছে, না দেখলে থাকে না। বাড়ীটারও একটা ব্যবস্থা করতে হয় । নইলে বাড়ীম্বর সব নষ্ট হয়ে যাবে। রাধামোহন নিজে গত বৎসর ওকালতি পাশ করে পরলোকগত পিতৃদেবের পসারে বসেছে। এবার দেশের চিঠি পেয়ে পুজোর ছুটিতে একাই গ্রামে এসেছে বাড়ীঘর এবং জায়গা-জমির একটা ৰিলি-বাবস্থা করতে । পাশের বাড়ীর বৃদ্ধ ভৈরব বাড়ুজ্যে দুদিন খুব দেখাশুনো করছেন। তিনি জোর করে তার বাড়ীতে রাধামোহনকে নিয়ে গিয়ে কদিন খাইয়েছেন। নইলে রাধামোহন নিজেই রোধে খাবে পৈতৃক ভিটেতে, এই ঠিক করেই এসেছিল। ভৈরব বাড়ুজ্যের বড়ছেলে কেষ্ট এসে বললে-দাদা, চা খাবেন, আম্বন। —তুই নিয়ে আয় এখানে কেষ্ট। বেশ লাগছে সন্ধ্যেবেলাট নদীর ধারে । —আনব ? —সেই ভাল, যা । গ্রামের সবাই অবিহি আত্মীয়তা করেছে, ভালবেসেছে। বৃদ্ধ লোকেরা বলেছে—আহা তুমি শুমাকান্তদা'র ছেলে, কেন হাত পুড়িয়ে রে’ধে খেতে যাবে। আমরা তে। মরিনি এখনও । এল-আমাদের বাড়ী । রাধামোহন সকলের কাছেই কৃতজ্ঞ । কেষ্ট চা দিয়ে কিছুক্ষণ গল্প করে চলে গেল। তারপর রাধামোহন আবার একলা । অন্ধকার রাজি, মধুমতীর জলে তারাভরা আকাশের ছায় পড়েছে। রাধামোহন বসে বসে ভাবছে, এই এতবড় বাড়ীটা তার ঠাকুরদাদা তৈরি করেছিলেন,কেন এখানে ? সেকালের পুলিশের দারোগা ছিলেন তিনি। অনেক পয়সা রোজগার করেছেন বটে কিন্তু বৈষয়িক বুদ্ধি ছিল না সেকালের লোকের। এই বনজঙ্গলে-ভরা গ্রামে কেউ পয়সা খরচ করে বাড়ী করে ? কি কাজে আসছে এখন ? _ আচ্ছা স্বরকির কলওয়ালার বাড়ীটা নেয় ? তাহলে পুরনো ইটের দরে বাড়ীটা বিক্রি করা যায় । খুটু করে কিসের শস্ব শোনা গেল । রাধামোহন দেখলে, একটি দশ এগার বছরের টুকটুকে ফস মেয়ে ঘরের দাওয়ার আড়াল থেকেউকি মারছে। ঘরের মধ্যে হারিকেন জলছে, বারান্দাতে সামান্ত আলো এসে পড়েছে, স্বতরাং একেবারে অন্ধকারে সে বসে নেই। - ভৈরব বাড়ুজ্যে একবার ছেলে পাঠায়, একবার মেয়ে পাঠায়, লোকটা খুব যত্ন করছে বটে। ও বললে—কি.খুকি, ভাত হয়েছে বুঝি ? একটু পরে মেয়েটি সংকোচের সঙ্গে বাইরে এসে দাড়ায় । রাধামোহন বললে—তোমার নাম কি? -णचैौ ।