পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 8 বিভূতি-রচনাবলী কলকাতায় । এখান থেকে বেরুতে পারলে বাচি। একটা ভাল লোকের মুখ দেখতে পাই নি আজ তিন বছরের মধ্যে । একথা তাঁহাকে অবগু জিজ্ঞাসা করি নাই, এতই যদি তাহার সহায়, তবে আজ তিন বছর এখানে পড়িয়া থাকিয়া ভগ্নীপতির বাজার-সরকারি করিতেছে কেন ? আরও কিছুদিন কাটিয়া গেল। একদিন চৈত্র মাসের দুপুর রোদে দেখি সে সাত মাইল দূরবর্তী বাজার হইতে প্রকাও একটি ভারী মোট ঝুলাইয়া আসিতেছে। খালের ধারে আমার সঙ্গে দেখা । আমাকে দেখিয়া মোট নামাইয়া গাছের ছায়ায় একটু বসিল । বলিলাম—এতে कि ? —হাট-বাজার করে ফিরছি। আটা, ডাল, জুন, এই সব । —রাস্ব মুখুজ্যে আজ সকালে বকবিকি করছিলেন কাকে ? —দাদাবাবুর মেজাজ বড় গরম। বাগ দিপাড়ার এক প্রজাকে ডাকতে পাঠালেন, একটু দেরি হয়েছে ফিরতে আমার, আর অমনি বকবিকি শুরু করেছেন । 曹 —তোমার দিদি কিছু বলেন না ? —দাদাবাবুকে দিদি বড় ভয় করে চলে। ছোকরা চলিয়া গেল। সে রাত্রেই আমার স্ত্রী বলিলেন—আচ্ছ, রামু মুখুজ্যের শাশুড়ি এখানে থাকেন কেন ? —তা কি করে বলব ? —বড় ভাল লোক । এমন হাতের রাস্লা ! আমায় বিকেলে আজ জলখাবার খাইয়েছিলেন। যেমন মিষ্টি কথাবাৰ্ত্ত—বাব, রামুবাবু ওঁর শালাকে যা বকলেন আমার সামনে । বাজার থেকে কি জিনিস ভুলে আনে নি। একেবারে ননসেন্স, বেরিয়ে যাও, বসে বসে গিলছ ! এমন সব যা তা বললেন, মায়ের চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল। .—মুখুজ্যে মশায়ের স্ত্রী কিছু বললেন না ? $o —ও বাবা, তিনি ভয়ে কাটা ! মানে, একটু কিন্তু-কিন্তু মনেই হয় তো ? এই বাজারে মনে ভাব, মা ভাই সংসারের গলগ্রহ তো ? আচ্ছ, কেন ছেলেটিকে বল না কোথাও গিয়ে কিছু করতে n এর চেয়ে যে, বেরিয়ে গিয়ে যা হয় একটা কিছু করাও ভাল। যতদূর বুঝলাম মায়ের মনে খুব দুঃখু। জামাইয়ের ভাত গলা দিয়ে নামে না । শুনিয়া খুবই দুঃখিত হইলাম। ভাবিলাম কালই ছোকরাকে বুঝাইয়া বলি। অল্প বয়স, এই তো জীবনে বাপাইয়া পড়িয়া যুঝিবার সময় ; সার-জীবন তার সামনে, বৃহত্তর ক্ষেত্রে অগ্রসর হোক বীরের মত—তবে তো সে নিজেকেও খুজিয়া পাইবে। এ বাচা তো জড় পদার্থের অচলত্ব, ইহা তাহাকে বুঝাইতেই হইবে। 尊 @ পরদিন তাহার সঙ্গে আবার দেখা । সে নিজেই আমাকে বলিল—দেখুন, একটা কাজ