পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ጙbሥ বিভূতি-রচনাবলী আমার দিকে চেয়ে কুণ্ডু মশায় বললেন—আপনি যে ! আপনি যে এখানে আসবেন, তা ভাবি নি। বক্ষন, দুটো খেয়ে আসি। এখন ছুটি পেলাম। বডড খিদে পেয়েছে— বেলা আড়াইটে উত্তীর্ণ প্রায়। ক্ষুধাৰ্ত্ত বৃদ্ধকে আমি একটুও দেরি করতে দিলাম না। বললাম—যান শীগগির যান, আহার করে আসুন । কুণ্ডু মশায় চলে গেলে আমি ভাস-খেলুড়েদের উদ্দেশ করে বললাম—এখানে খাওয়া হয় কোথায় ? একজন বললে—এই ঘরের পর উঠোন, তার ওদিকে রান্নাঘর । গদির ঠাকুর আছে, সেই রাধে । —কি রকম খাওয়ায় ? —সে কথা আর ওঠাবেন না দাদা। উরমুনি ডালের জল, এই এতটুকু খয়রা মাছ কি তিৎপুটির ঝোল, একটা লাল ডাটা দিয়ে কুমড়ে দিয়ে ঘ্যাট—ছিঃ—মাহুষের যুগ্য নয়। একজন বলে উঠল—পরের পয়সায় থেতে আর কত দেবে বল ? ওই যা পাচ্ছ, তাই ¢Úन्न ! কুণ্ডু মশায় পরিতৃপ্তির সঙ্গে আহার করে এলেন, তার মুখ দেখেই বুঝতে পারা গেল। তার পর কাপডের গীট-বধা চটেব উপর শ্রান্ত দেহ প্রসারিত করে আমার দিকে চেয়ে বললেন— এখানে এসে বসুন । —চলুন ন দীঘির ধারে গিয়ে একটু বসা যাক । —আজ আর ছুটি নেই, কলকাতা থেকে মহাজন আসবে এই ট্রেনে, হিসেব ঠিক করে দিতে বলেছেন বাবু-ও গোষ্ঠ, পাইকের মালের ফিরিস্তিগুলো করে ফেল গিয়ে—বসে তাস পিটলে চলবে না । t এমন সময়ে হঠাৎ হল্লা ও হাসি মন্ত্রমুগ্ধবৎ থেমে গেল । রায় সাহেব ঘনহাম বসাকের স্কুল, চিঙ্কণ, মুখাদ্য-পরিপুষ্ট দেহ দোরের কাছে দেখা যেতেই তাস-খেলোয়াড় কজন এবং কুণ্ডু মশায় ভড়াক করে চৌকি থেকে উঠে দাড়িয়ে পড়লেন। রায় সাহেব বললেন—এত গোলমাল কিসের কুণ্ডু মশায় ? ঘরের মধ্যে সকলের অবস্থা তখন হঠাৎ হেডমাস্টার ক্লাসে ঢুকলে কোলাহলয়ত স্কুলের ছাত্রদের মত। সবই পাষাণ-মূৰ্ত্তির মত একদম জমে গেল। আমাকে ঘরের মধ্যে দেখতে পেয়ে রায় সাহেব বললেন—এই যে, খামবাৰু যে—এখানে আপনি ? —একটু কুণ্ডু মশায়ের কাছে দরকার ছিল। 。 —কুণ্ডু মশায়ের সঙ্গে আপনার বনবে ভাল। কুণ্ডু মশার শুনেছি কবিতা লেখেন। মানে, লোকটা ছিল ভালই, কিন্তু ওর মাথায় কি পোকা অাছে—থাকে থাকে, ফট করে একদিন দেখি গদিতে নেই। কোথায় গেল ! বসে নাকি কোথায় কবিতা লিখছে। আমার গদির কাজ চলে কি করে । কবিতা-লিখে তো পেট ভরবে না দাদা। কি বলেন ।