পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*e বিভূতি-রচনাবলী —বেশ বেশ । বসুন । —না, আর বসল না। অনেকক্ষণ বেরিয়েছি বাড়ী থেকে । —কবিতা লেখা-টেখা হয় কি আর । —আপনি আছেন তো এখন ; আসিব একদিন । বলে সামান্ত কয়েক পা গিয়েই ফিরে এসে বললেন—ভাল কথা, পকেটেই আছে, আজ আপনার এখানে আসতে আসতে বটতলায় বসে লিখলাম কটা লাইন— প্রকৃতির কোলে শুয়ে সৌন্দর্ঘ্যে ভাসায়ে আঁখি সাধ হয় অনিমেষে শুধু যেন চেয়ে থাকি। নীরবে নিঝুমে সেথা কি যেন মুখের পরে স্বপ্নরেণু কিংবা মায়া নিয়ত ঝরিয়া পড়ে। পরমাণু নিভে যায় ভাঙিয়া জড়ের কারা ; কে তুমি ডাকিছ মোরে করিয়া পাগলপার । কুণ্ডু মশায়কে কোলে তুলে নিয়ে নাচবার ইচ্ছে হল, ব্রাহ্মণ না হলে পায়ে হাত দিয়ে পায়ের ধুলো নিতাম। বললাম—এই কটা লাইন এইমাত্র লিখলেন পথে আসতে আসতে ? কুণ্ডু মশায় হেসে বললেন—বটতলার ছায়ায় বসে, খানিকট আগে । —আপনি ঘনশ্বামবাবুর দোকানে কাজ করেন বটে কিন্তু আপনি সে জায়গায় উপযুক্ত নন। কবিতায় আর্টের কোন দরকার নেই। আপনার মনের আনন্দের অনুভূতিকে ধ্বনি ও ঝঙ্কারের মধ্যে প্রকাশ করছেন এবং সফল হয়েছেন, সেইটেই বড় কথা। আমি আপনার মনের সেই সময়ের অনুভূতিকে ওই কটা কথার মধ্যে দিয়ে নিজের মনে ধরতে পারছি—ওই হল কবিতা । so চুন কিনতে গিয়ে রায়সাহেবের দোকানে বসলাম খানিকট। মস্ত বড় গদি, লোকজন খাটছে, নানারূপ ব্যবসাদারী শব্দ ও বোল উখিত হচ্ছে—*ছএর দাগের নিয়ে এস’, ‘বাইশ শ বাইশ রেলি দশ জোড়া, মিহি জরিপাড় চন্দননগর, তেনের আঠার পাতা ইত্যাদি। পাইকারী ক্রেতাদের বড় ভিড় লেগেছে, ঝম্ ঝম্ টাকার শব্দ উঠছে—ওদিকে গদির এক পাশে আনকোরা টাটকা দশটাকার নোট তাড়াবন্দী হচ্ছে। ঘনশুমকবুকে একপাশে বসে থাকতে দেখে কাছে গেলাম। গত পাঁচ বৎসরে রায় সাহেবের বয়স যেন পনের বছর বেড়েছে। আমায় বললেন—আমুন, বম্বন শুামবাবু, অনেকদিন দেখি নি । —ভাল আছেন ? —ভাল কোথায় ? অঙ্গ বছরাবধি ভুগছি নানা অসুখে । আর এইবার বোধ হয় চললাম— 6 6, —না নু, সে কি কথা। আপনার বয়েসটা কি ! —আপনি জানেন না, দুটি হাজার টাকা খরচ করেছি এক বছরের মধ্যে। কিন্তু