পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিধু মাষ্টার お> সম্বন্ধে নিজের সপ্ত অধীত লজ-এর মডার্ন ইউরোপের ঐতিহাসিক জ্ঞান সগৰ্ব্বে প্রদর্শন করবার বেীক তখন অনেক বেশি। সকাল বেলা, আমি সমবেত স্ব-পাচ জন লোকের সামনে বিসমার্কের রাজনীতি ও জীবনী (লজ-এর মডার্ন ইউরোপ অনুযায়ী ) সোৎসাহে বর্ণনা করছি, এমন সময়ে ওপাড়ার কানাই মামা ( মুহাসিনী মাসীমার ছোট ভাই ) এসে সেখানে দাড়াল । মেজ দাদু জিজ্ঞেস করলেন—কি কানাই, কবে এলে কলকাতা থেকে ? কানাই বললে—আজই এলুম কাকাবাৰু। দিদি আজ ওবেলার ট্রেনে আসবে কিনা। দাদাবাবু পনেরে দিনের ছুটি নিয়ে আসবেন। তাই আমি সকালের গাড়ীতে চলে এলুম স্টেশনে গাড়ী পাঠানোর ব্যবস্থা করতে । শুনে মনে কেমন একটা আনন্দ ও উত্তেজনা অনুভব করলুম। মুহাসিনী মালীম আসবেন আজই, দেখব—এতকাল পরে সুহাসিনী মাসীমার সঙ্গে চক্ষুষ দেখা হবে । আমার মনের সেই .মানসী প্রতিমা মুহাসিনী মাসীমা । তার পর আবার নিজেই আশ্চৰ্য্য হয়ে গেলুম নিজের মনের ভাবে । আসেন আমুন, না আসেন না আমুন—আমার কি তাতে ? অথচ সন্ধ্যাবেলার দিকে কাটালতলাটায় পায়চারি করছিলুম, বোধ হয় কিছু উৎসুক ভাবেই। এই পথ দিয়েই মুহাসিনী মাসীমার গরুর গাড়ী স্টেশন থেকে আসবে। এই একমাত্র 1 সন্ধ্যার কিছু আগে গরুর গাড়ী স্টেশন থেকে ফিরে এল—কানাই মামার ছোট ভাই বীরু তাতে বসে । জিজ্ঞেস করলুম—কোথায় গিয়েছিলি রে বীরু ? গাড়ী গিয়েছিল কোথায় ? বীরু বললে—স্টেশনে। বড় দিদির আলবার কথা ছিল, এল না । বললুম—রাত্রের ট্রেনে আসতে পারেন তো— —ন, তা আসবেন না । অন্ধকার রাত, মেঠো পথ দিয়ে আসা—রাত্রের গাড়ীতে কখনও আসবে না। কথাই আছে। গাড়ী চলে গেল । জীবনের গত দশ বছরের মধ্যে—তখন আমার বয়স ছিল নয়, এখন উনিশ—এই প্রথম বার মুহাসিনী মাসীকে দেখবার সুযোগ ঘটবার উপক্রম হয়েছিল, কিন্তু উপক্রম ছুয়েই থেমে গেল, ঘটল না। @ সেদিন কেন, তার পর প্রায় এক মাস সেখানে ছিলাম—মুহাসিনী মাসীম তার মধ্যেও আসেন নি। 尋 কলেজ থেকে বায় হয়ে ক্রমে চাকরিতে ঢুকে পড়লুম। বয়স হয়েছে চব্বিশ, ষোল বছর কেটে গিয়েছে বাল্যের সেই মামার বাড়ীর দিনগুলি থেকে। দিদিমা বেঁচে নেই, মামার বাড়ী যাওয়া আগের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছে, মুহাসিনী মাসীমার কথা শুনতে পাই কেবল আমার