পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

इििदे $% —পাস্তাতাত খেয়ে নিয়ে চলো সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ি । নইলে জায়গা পাওয়া যাবে না। জানো তো কি রকম ভিড় হয় ? মহা উৎসাহে রামধন ঝিঙের ক্ষেতের উত্তর আলের বেড়া বেঁধে বললে—আজ দশ বারো দিন হোল বেড়াটা ভেঙেচে, বাবলা কাটা আর কুল কাটা দিয়ে বাধতে হবে কিন্তু সম্প্রতি সে খুব অপমান হয়েচে হৃদয় বিশ্বাসের জমির বাবলা কাটা কাটতে গিয়ে । হৃদয় বিশ্বেসের জামাই মাখন ওকে বলেছিল।—বলি, এবার কিন্তু ফৌজদুরি হবে মনে রেখো । মোরা বাবলা গাছ রেখিচি তোমার বেড়ায় কাটা দেবায় জন্তি নয় । মনে রাখবা । 尊 সে বলেছিল—দুটো ডাল নেবানি তোমার গাছ থেকে । নইলে বেড়া দেবানি কি করে ? মাখন রেগে বলেছিল—এ তে বড় আবদার দেখি,—তোমার ? ঘাড় ধরে বার করে দেবে। জমি থেকে বলে দিচ্চি । তোমার বাবার জমি তো নয় এটা ? —বাবা তোলবার দরকার কি জামাইবাৰু? না হয় চলে যাচ্চি । • —তাই যা— * ভালো বলতে হয় সীতেনাথ পোদের ভাই হরিকে । সে পাশের কলাবাগান থেকে নিম্নস্বরে ওকে ডেকে বললে—বলি, বড় লোকের জমিতে কেন যাও দাদা ? অালের মাথায় আমাদের বড় বাবলা গাছটা থেকে যত ইচ্ছে ডাল কেটে নিয়ে যাও । —দ্যাখো দিকি ভাই, কি অপমান সকালে করলে মোরে ? —বাদ দ্যাও । সাত খাদী জমিতে ধান বুনে মাথা একেবারে স্বগগে উঠে গিয়েচে ওদের । বড় লোকের দোরে যাওয়ার দরকার কি তোমার দাদা ? নিয়ে যাও ডাল যত ইচ্ছে । 尊 সেই ডাল দিয়ে আজ দশ পনেরো দিন পরে বেড়া বাধলো রামধন। সেও জাতে পোদ, নিতান্ত গরিব । একটা ধানের ছোট আউড়িও নেই বাড়ীতে। এমন লোকের কি আর খাতির হয় গায়ের বড় লোকদের মধ্যে ? 藝 কাছারীর নায়েব ঘনশ্যাম সরকারকে অনেক খোশামোদ করে বাধাল জমা দিয়ে গত আশ্বিন মাসে মাছ ধরে সামান্য কিছু পেয়েছিল । তাই দিয়ে ধান কিনে এতদিন চলেচে। এইবার ভরসা এই ঝিঙের ক্ষেত। ঝিঙের দাম আছে বাজারে এবার। ষোল টাকা.মণ। ফি হাটে একমন ঝিঙে বিক্রি হলেও ওদের সংসার হেঁসেখেলে চলবে । এ জমিতে ঝিঙে ফলবেও ভালো । দুপুরের পর ভর্তিটাত খেয়ে রামধন আর তার ছেলে ফৰি পাচার বাজারে যাত্র দেখঙে যাবার জন্যে তৈরি হোল। এখান থেকে ছ-কোশ পথ । পথে বামুলদহর বিল পার হতে হবে।