পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান & S যেন ওর মনের কথা বুঝেই বল্পেন—তোমাদের প্রকৃত স্থানএর মণ্ডলীতে। আমার দেখা সর্বদাই পাবে, যখন চাইবে তখনই দেখা দেবো, সেজন্য ভেবো না । তোমরা যাও এর সঙ্গে । প্রণয়দেবী বরেন—উনি আর আমি পৃথক নই। উনি যেখানে, সেখানে আমি আছি , আমি যেখানে, সেখানে উনিও থাকেন । প্রেম আর করুণা পরস্পর ফুল আর স্বতোর মত একসঙ্গে আছে। স্থতোকে ফেলে মালা গাথা যায় না, ফুলকে বাদ দিয়ে সুতো নিয়ে মালা হয় না । —কেন, বিনি স্থতোয় মালা হয় না সখী ? —বড় সস্তপণে গলায় দিতে হয়। বড় ষ্টুনকো হয়। বড় অল্পে মরে বঁাচে । করুণা প্রেমকে সাহায্য না করলে,প্রেম হয় ঠুনকো। এদিকে প্রেম পেছনে না থাকলে করুণ রক্তাল্পতু রোগে মারা পড়ে। ছলনা কেন করচো সখী, তুমি নাকি এ জান না ! আবার নীল শূন্তপথে, আবার বাধাহীন তড়িৎ-অভিযান ! যতীন ও পুষ্প বুড়োশিবতলার ঘাটে পৌছে গেল। ১২ যদিও তৃতীয় স্বর্গে দিন নেই রাত নেই, সময় অবিভাজ্য ও মাত্রাস্পর্শহীন তবুও যতীনের সুবিধার জন্যে পুষ্প বুড়োশিবতলার, ঘাটে পৃথিবীর মতই দিনরাত্রি স্বষ্টি করতে । ঘুমের আবশ্বক ন৷ থাকলেও নিজের স্বস্ট রাতে ঘুমোতো । দিন কয়েক পরে । পুপ ঘুম ভেঙ্গে উঠেচে। ওর শয়নকক্ষের বাইরের প্রকাণ্ড মুচুকুন্দ চাপার গাছটাতে পাখীরা কিচ কিচ করচে। ও দেখলে জানালা দুয়ে নতুন-ওঠা প্রভাত-হুর্যের আলোর বং কেমন অদ্ভুত ধরনের সবুজ ও গোলাপী। আরও বিস্মিত হোল দেখে যে সেই রঙীন আলোর মুছ জ্যোতিটা বাপাকারে তার খাটটা ঘিরে রয়েচে যেন । যতীন বুঝতে পারতো না ব্যাপারটা। পুষ্প বুঝলে ওপরের স্বর্গ থেকে কোনো উচ্চতর আত্মা তাকে স্মরণ করেচেন। যতীনকে কথাটা বলতেই সে বল্লে—চল আমিও যাই । পুপ দুঃখিত স্বরে বল্পে—পারবে না যতুদা, নইলে তোমায় ফেলে যেতে কি আমার সাধ ? আমার মনে হচ্চে ইনি সেদিনকার সেই দেবী, করুণাদেবী যার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন। তা যদি হয়, সে স্বর্গে যাওয়া তোমার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব । তুমি থাকে, আমি যাই, কাজ শেষ হলেই চলে আসবো । *動 গোলাপী আলোর সরল জ্যোতিরেখা অনুসরণ করে সে মহাশূন্যপথে উঠলো। পুষ্প চতুর্থ স্তরের আত্মা, তার শক্তির গতিবেগ যতীনের চেয়ে অনেক বেশী । কিন্তু যতীন সঙ্গে থাকলে পুপ নিজেকে সংযত করে চলে ওর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে। নইলে লক্ষ লক্ষ মাইল চোখের নিমিষে অতিক্রম করবার শক্তি ধরে সে । so পুষ্প যে স্বর্গে পৌঁছল, পৃথিবীর ভাষায় তার হয়তো বাইরের রূপের অনেকখানিই বর্ণনা