পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান (? & জীবনের তো সবে শুরু, বহুদূরের পথে কোথায় কোন বঁাকে নক্ষত্রের মত সারারাত জেগে আছে বনফুলের দল, চাদের আলোয় জ্যোৎস্নাময় হয়ে আছে সে জায়গা—আবার আশা ফুটে ওঠে মনে—অতীত বাসররাত্রির স্মৃতির আনন্দের মত পবিত্র অনুভূতিতেমন ভরে ওঠে। যতীন দেখলে একটি আত্মা অনেকক্ষণ থেকে বিবাহসভার এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করচে । যতীনকে দেখে সে কাছে এল। বল্লে—আপনি কে ? আপনি এখানে কেন ? যতীন বল্লে—আপনি কে ? —আমি এই বিধবা মেয়েটির স্বামী। —ওকে একটু সাস্তুনা দিন আজ । 髒 —আমি চেষ্টা করচি কিন্তু পারচি নে। আপনাকে দেখে বুঝেচি আপনি উচ্চ স্বর্গের মানুষ, আপনি যা পারবেন, তা আমি পারবো না । তাই আপনাকে জিজ্ঞেস করছিলাম আপনি এখানে কেন । —এই মেয়েটির দুঃখে একটি দেবীর মন গলে গিয়েছে। তিনি পাঠিয়েচেন এখানে আমাদের । —কই, আর কেউ তো নেই এখানে ? আপনি তো একা— যতীন পুষ্পের পাশেই ছিল, স্বধার স্বামী খুব উচুদরের আত্মা নয়, ওরা দেখেই বুঝেছিল, সে দেখতে পেলে না পুষ্পকে | যতীন বল্পে কথাটা । স্বধার স্বামী বিনীতভাবে তাকে এবং উদ্দেশে পুষ্পকে প্রণাম করলে। বল্লে—আমি বড় কষ্ট পাচ্চি ওর জন্যে। কিন্তু কিছু করবার নেই, ও যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন ওকে সাস্তুনা দেবার চেষ্টা করি—কিন্তু আমার চেয়ে ওর অবস্থা উন্নত, আমার ক্ষমতা নেই কিছু করবার— • . যতীন বল্লে—উচ্চস্বর্গের একজন দেবী আপনার স্ত্রীর ওপর কৃপাদৃষ্টি রেখেচেন—তিনি আমাদের এখানে পাঠিয়েচেন । তিনি নিজে এখুনি আসবেন— পুষ্প বল্লে—তিনি এসেচেন, এই তো এলেন – স্বধার স্বামী পুষ্পের কথা শুনতে পেলে না, যতীন প্রণয়দেবীকে দেখতে পেলে না। কিন্তু প্রণয়দেবীর শাস্ত কোমল প্রভাব সে মনের মধ্যে অনুভব করতে পারলে। প্রণয়দেবী নিজে সব সময় স্বধার পাশে এসে দাড়িয়ে রইলেন, বল্পেন—এদের ফেলে আমার কোথাও থেকে স্বথ নেই। এবারও এদের ওই রকম ভুগতে হবে, স্বধার স্বামী তত উচ্চ অবস্থার নয়—তা ছাড়া কেন এরা এ রকম ভুগচে তু আমি ঠিক জানি না । জগতে এইসব ঘটে যে অদৃপ্ত বিরাট শক্তির নির্দেশ অনুসারে, সে “শক্তি বড় রহস্যময়। তার কর্মপ্রণালী বা প্রকৃতি সম্বন্ধে কিছুই বুঝি না, জানি-ও না । পুষ্প বল্লে—তিনিই তো ভগবান ? প্রণয়দেবী চমকে উঠে বল্লেন-ও নাম কানে গেলে মন অন্যরকম হয়ে যায়। যখন তখন ও নাম নিও না । ভগবান যে কি, তা আমরা জানিনি এখনও । যে শক্তির কথা বলচি, 夢