পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©8 বিভূতি-রচনাবলী করতো জানি, বি-এ পর্যন্ত পড়েছিল তাও জানি । আশা বলতে প্রায়ই, আমাদের গায়ের নেত্যদা এবার বি-এ পাশ দেবে। উঃ, আশা যে এতদূর নেমে যাবে— ! এখনও আমি দুবছর মরিনি—এর মধ্যেই—পাপীয়সী। —যাত্ৰাদলের ভীমের মত কথা শুরু করে দিলে যে যতীনদ । আশা-বৌদির বয়সের কথা ভেবো | জড়দেহ থাকলেই তার কামনা বাসনা আছে । বড় বড় হাতী তলিয়ে যাচ্চে তো মুখ আশা-বৌদি । যতীন বিরক্ত হয়ে বল্লে--লেকচার রাখে । এই দেখাতে নিয়ে এলে ! উঃ, ইচ্ছে হচ্চে ছোকরার ঘাড়টা মট্কাই—পারি কই ? হাত পা যে হাওয়া । —অত অধৈর্য হয়ে না । খুন করবার প্রবৃত্তি জাগলো কেন ? একটা কিছু করতে হবে। সে কিন্তু ওভাবে নয়। একটা ছোকরাকে মারলে আরও অনেক ছোকরা জুটবে। মন নীচু দিকে নামলে জলের মত গড়িয়েই চলে । আশা-বৌদির অদৃষ্ট ভাল না । এখনও অনেক দুঃখ, অনেক অপমান আছে ওর ভাগো, তুমি আমি কি করবো ? কৰ্মফল ওর । বেচারী ! এখন ওরা যা করচে, তাতে বাধা দিতে তুমি আমি কেউ নই! মানুষ স্বাধীন, সে পুতুলখেলার পুতুল নয় । বাসনানদা পাপের পথেও বয়, পুণ্যের পথেও ধয় । চলো, এক কাজ করি । যতীন কিন্তু এগিয়ে গেল পুকুরের ওপাড়ের দিকে । আশার পরনে সরু কালোপাড় ধুতি, হাতে ক’গাছ। সোনার চুডি, যতীন চিনতে পারলে তাদের গ্রামের মহেন্দ্র সেকরার দোকান থেকে বিয়ের পরের বছর গড় ; অাশা বলে পডেচে গাছের গুড়ির আড়ালে, নেত্যনারান কিন্তু দাড়িয়ে আছে । আশা বলচে —বা ষ্টী করে দিলে গায়ের লোক যদি কিছু বলে ? নেত্য হাত নেড়ে বল্লে--থোড়াই কেয়ার । এ শৰ্মা আর কাউকে ভয় করে না । তুমি ঠিক থাকলেই হোল । তুমি বলবে, বাপের বাডীর সংসার আর দুদিন পরে ভাইয়েদের সংসার হবে । আমার শ্বশুরবাড়ীর টাকায় আমি বাড়ী কবুfচ । মিটে গেল, কার কি বলবার আছে ? ---ও জমিটা তা হোলে কিনতে হবে তো ? —-সে লেখাপড়া আমি করে দেবো । বেশ হবে, ইটের দেওয়াল আর খড়ের চালা করে দিঠ । তুমি ওখানে চলে যাও । পাড়ার বাইরে ঘর হবে, একটু বেশী রাত করে চলে যাবে, শেষ রাতে উঠে চলে আসবো । এমন বনে-জঙ্গলে ভয়ে ভয়ে আর দেখা করতে হবে না । সারারাত্রি মজা করো, কি ৰলো ? & —তুমি য। বোঝে । আমার কিন্তু হাতে মাত্র পঞ্চাশটি জমানে টাকা আছে, আর কিছু নেই বলে দিচ্চি—দু'এক কুঁচে গহনা-ভাঙা সোনা হয়তো আছে। বাডী করবার খরচ কিন্তু তোমায় দিতে হবে । 鬱 নেত্য হাসিমুখে বল্লে—দেখি মুখখান ? ও মুখ দেখে বাড়া তো বাড়ী, পয়সা থাকলে মটোর গাড়া, কিনে দিতে পারতাম। কিন্তু বলে দিচ্চি, ও শম্ভু চকত্তিটার সঙ্গে আর কথা বলতেও পাবে না কোনো দিন ।