পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 সেদিন পুষ্প বল্পে – যতীনদা, মন খারাপ করে বসে আছ নাকি ?* চলো করুণাদেবীর কাছে যাবে | — আমি সেখানে যেতে পারবো না । অত উচুতে উঠলে আমার চৈতন্য থাকে ন জানো— সব সময় তাকে দেখতেও পাইনে । কি করবো বলা । তা ছাড আমার অন্য অনেক রকম ভাবলা— 昂 —ভাবনা তো জানি ও ভেবে কোনো লাভ আছে ? যার যেমন অদুষ্টে আছে, তেমনি হবে । চেষ্টা তো করলে অনেক । ওর কর্মফল ওকে ওই পথে নিয়ে যাচ্ছে, তুমি আমি কি করবে বলে । আরও কয়েক মাল কেটে গিয়েচে । আশালতার মনের অবস্থা দিনকয়েকের জন্য একটু ভাল হয়েছিল বটে, কিন্তু স্থায়ী কোনো ফল তাতে হয়নি। নেত্য তাকে গ্রামের প্রান্তে আলাদা বাড়ী করেও দেয়নি। ভুলিয়ে তার কতকগুলো সোনার গহনা হাত করে সেই টাকায় ওকে কলকাতায় এনে রেখেচে । যতীন রোজ সেখানে যায় রাত্রে, একটা লম্বা ব্যারাকমত পুরনো বাড়ীর একটা ঘরের সংকীর্ণ রোয়াকে আশা ৰসে রাধে, এখানে সে পাশের ভাড়াটেদের সামনে সামাজিকত বজায় রাখার জন্যে বিধবার বেশ ঘুচিয়ে নেতার স্ত্রী সেজেচে, হাতে চুড়ি পরে, কপালে সি দুর দেয় । প্রথমে যেদিন নেতাই তার কাছে এ প্রস্তাব করে যতীন সেখানে উপস্থিত ছিল । নেত্য বল্লে—রাস্তা থেকেই তোমাকে 。廊 করতে হবে আশা । যেখানে যাবে, সেখানে আশ-পাশের ঘরে অনেক ফ্যামিলি বাস করে । তাদের সামনে কি বলে দাড়াবে, কি পরিচয় দেবে ? বাড়াওয়ালাই বা জায়গা দেবে কেন ? * আশা বলে—সে আমি পারবো না । ব্রাহ্মণের ঘরের বিধবা হয়ে আবার পেড়ে. কাপড পরবো, সিদ্ধির পরবো,—এ হবে না আমায় দিয়ে নেতাদ।-- নেতা শ্লেষের স্বরে বল্লে—াও নাও আর ন্যাকামি করতে হবে না। ব্রাহ্মণের বিধবার তো সব রাখলে, এখন যার সঙ্গে বেরিয়ে এলে তার কথামত চলো । আশা বিস্ময়ের স্বরে বল্লে-বেরিয়ে এলাম . —আহা-হা নেকু ! বেরিয়ে আসার কি হাতীঘোড়া আছে নাকি ? আবার তুমি ঘরে ফিরে যাও তো মানিক । এতক্ষণ গায়ে চি-চি পড়ে গিয়েচে ঘাখো গে যাও— বা-রে, তুমি বল্পে আমাকে কলকাতায় আলাদা বাসা করে দেবে । আমি আমার গহনা বিক্রি করে চালাবো–তারপর মাকে সেখানে নিয়ে এসে রাখা হবে বলো নি ? —ষ্ট্য গো হ্যা। এখনও তো তাই বলচি, বলচি নে ? আমার হাত ধরে যে-মাত্তর বাড়ীর বাইরে পা দিয়েচ, সেই মাত্তরেই তুমি বেরিয়ে এসেচ । ওকেই বলে বেরিয়ে আসা । এখন