পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

iro বিভূতি-রচনাৰঙ্গী সকাল ন’টা । রান্নার কি ব্যাপার হবে ওকে জিজ্ঞেস করলাম । ছ'জনে আবার পরামর্শ করতে বলি। অমন সাজানে ঘর-সংসার ছেড়ে এসে রিক্ততার আনন্দ নতুন লাগচে। এখানে আমাকে নতুন করে সব করতে হবে। কিছু নেই আমার এখানে । পান্না বললে—কাছে হোটেল নেই ? —তা বোধ হয় আছে। —দু’খালা ভাত নিয়ে এসে আমাদের জন্যে, এবেল কিছুরই যোগাড় নেই, ওবেলা যা হয় হবে | —খালা দেবে ? —তুমি খেয়ে এসো, আমার জন্যে নিয়ে এসো শালপাত কি কলার পাতা কিনে। —লে বেশ মজা হবে কি বলে ? —খুব ভালো লাগবে। তুমি নাইবে, তোমার কাপড় আছে ? —কিছু না। শুধু হাতে বাড়ী থেকে বেরিয়েচি। কাপড় কোথায় ? —আমার শাড়ী পোরো একখানা । নেয়ে নাও। কলের জল চলে যাবে l নতুন ঘরকন্ন। নতুন সংসারের সহস্ৰ অস্ববিধে থাকা সত্বেও এর মধ্যে কেমন একটা অদ্ভূত আনন্দ আছে। হোটেলের অখাদ্য ডাল ভাত আর শাক বেগুনের চচ্চড়ি খেয়ে কি খুনী দু’জনে। আমার দিক থেকে এটুকু বলতে পারি, আমার দেশের সংসারের অবস্থা অসচ্ছল নয়, স্বরবালা আমার খাওয়া দাওয়ার দিকে সৰ্ব্বদা নজর রাখতে), স্বতরাং হোটেলের ভাল-ভাতের মত খাদ্য আমার মূখ জীবনে ক'দিনই বা দিয়েচে । কিন্তু তবুও তো খেলুম, বেশ আনন্দ করেই খেলুম। পান্না উচ্ছিষ্ট পাতাগুলো ফেলে দিয়ে অংগ ধুয়ে পরিষ্কার করে দিলে। বললে— পান নিয়ে এসে দু পয়সার। পয়সা দিচ্চি—বলৈই পেটরা খুলতে বসলো। আমি হেসে বললাম—শুধু পানের দাম কেন, তা হলে এক বাক্স সিগারেটের দাম দাও। ওর মুখ দেখে মনে হল ও আমার এ কথাটাকে শ্লেষ বলে ধরতে পারে নি, দিব্যি সরলভাবে একটা টাকা আমার হাতে তুলে দিয়ে বললে—টাকাটা ভাঙিয়ে পান সিগারেট কিনে এনে । —কত আনবো ? A. —এক বাক্স আনবে, না একসঙ্গে ছ'বাক্সই না হয় আনে। আবার দরকার হবে তো ? —যদি কিছু ফেরৎ না দিই ? --কেন, আর কিছু কিনবে ? তা যা তোমার মনে হয় নিয়ে এলো । —কত টাকা আছে তোমার কাছে দেখি ? পান্না তোরঙ্গ থেকে একখানা খাম আর একটা পুটুলি বের করে গুনতে আরম্ভ করলে । pরিশ টাক। আর কয়েক জানা পয়সা দেখা গেল ওর পুজি। আমি বললাম—মোটে । ও বেশ সরল ভাবেই বললে-এর মধ্যে জাবার মুজরো করতে গেলেই হাতে পয়সা हळद ! -