चहैष वशं $$
ফুটে এ পর্যন্ত একটা পয়সাও চায় নি। বরং দিতে এসেচে ছাড়া নিতে চায় নি। অদ্ভুত মেয়ে এই পান্না।
রাস্তায় নেমে এদিক ওদিক চেয়ে দেখলাম কেউ কোনো দিকে নেই। কি জানি কেন, আজকাল সৰ্ব্বদাই আমার কেমন একটা ভয় ভয় হয়, এই বুঝি আমাদের গ্রামের কেউ আমাদের দেখে ফেললে। আমার এ মুখের সংসার একদিন এমনি হঠাৎ, সম্পূর্ণ আকস্মিকভাবে ভেঙে যাবে।
আমার বুক সৰ্ব্বদা ধড়ফড় করে ভয়ে। ভয় নানারকম, পান্নাকে হয়তে গিয়ে আর দেখতে পাবো না । ও যে ভালবাসা দেখাচ্চে হয়তো সব ওর ভান। কোনদিন দেখবো ও গিয়েচে পালিয়ে ।
চা নিয়ে ফিরে এলুম। তখনও পাল্লার চুলবাধা শেষ হয় নি।
পাল্লা বললে—খাবার কই ?
—খাবার আনিনি তো !
—বা, শুধু চা খাবো ?
—পয়সাতে কুলোলো কই ? চার আনাতে কি হবে।
—পাউডারের কোঁটোর মধ্যে যা ছিল সব নিয়ে গেলে না কেন ? আবার যাও, নিয়ে এসো। একটা টাকা নিয়ে যাও ।
টাকা নিয়ে আমি বেরিয়ে চলে গেলুম এবং গরম গরম কলাইয়ের ডালের কচুরি খান আটদশ একটা ঠোঙায় নিয়ে ফিরলুম একটু পরেই। আমি সচ্ছল গৃহস্থদ্বরের ছেলে, নিজেও যথেষ্ট পয়সা রোজগার করেছি ডাক্তারি করেrকিন্তু এমন ভাবে মাছরের ওপর বসে শালপাতার ঠোঙায় কচুরি খেয়ে সেদিন ধী আনন্দ পেয়েছিলাম, আমার সারা গৃহস্থ জীবনে তেমন আমোদ ও তৃপ্তি কখনো পাই নি ।
পান্নাকে বললাম, পান্না, পয়সা ফুরিয়ে যাচ্চে, কি হবে ? বাসাখরচ চলবে কিসে ?
ও হেসে বললে—বারে, আমার কাছে ত্রিশ বত্রিশ টাকার বেশি আছে না ?
—তুমি নিতান্ত বাজে কথা বলে। খরচের সম্বন্ধে কি জ্ঞান আছে তোমার ? ওতে কতদিন চলবে ?
—সোনার হার অাছে, কানের স্থল আছে।
—তাতেই বা ক'দিন চলবে ?
পান্না একটু ভেবে বললে—তোমাকে ঠিকানা দিচ্চি, তুমি নীলির কাছে যাও। আমরা জু'জনে মিলে মুজরো করলে আমাদের চলে যাবে। -
—লে হবে না ।
—কেন ?
—মীলির কাছে গেলেই তোমার মা জলিতে পারবে ।
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১১১
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
