পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী - سs a b —আসুন না বাইরে। লোকটা আমাকে আসর থেকে কিছুদূরে নিয়ে গেল একটা পুরনো দোতলা বাড়ীর মধ্যে। সেখানে গিয়ে দেখি জনকতক লোক বসে মদ খাচ্চে। মদ খাওয়া আমি স্থণা করি । আমি চলে আসতে যাচ্চি ঘরে না চুকেই—এমন সময় ওদের মধ্যে একজন বললে—শুনুন মশাই, এদিকে আন্ধন। আমার সঙ্গের লোকটি বললে—উনিই ঝড় বাৰু। ঝড়টড়ু আমি মানি নে, অধীর বিরক্তির সঙ্গে বললাম—কি বলচেন ? —আপনার সঙ্গে আমাদের কথা আছে । —কি কথা ? —ওই মেয়েটির সঙ্গে আপনার কি সম্বন্ধ ? —কেন ? —বলুন না মশাই, আমরা সব বুঝতে পেরেচি। —ভালোই করেচেন। আমি এখন যাই । —ন না শুহন। কিছু টাকা রোজগার করবেন ? —বুঝলাম না আপনাদের কথা । আমি কিন্তু বুঝতে পেরেচি ওরা কি বলবে । আমি বাইরে যাবার জন্যে দরজার কাছে আসতেই একজন ছুটে এসে আমার সামনে হাত জোড় করে বললে—বেয়াদবি মাপ করবেন। মদের বোতলের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলে—চলে নিশ্চয়ই ? আমি রাগের স্বরে বললাম—না । —বেশ, বন্ধন না ? কত টাকা চাই বলুন, রাগ করচেন কেন ? ঝড় বাবু লোকটি মোটামত, মদ খেয়ে ওর চোখ লাল হয়ে উঠেচে, গলার স্থর জড়িয়ে এসেচে। একটা মোট তাকিয়া ঠেস দিয়ে বসে ছিল । আমার দিকে চেয়ে বললে—কুড়ি টাকা নেবেন ? পচিশ ? ওই মেয়েটিকে চাই । আমার হাসি পেল ওর কথা শুনে ও আমাদের ভেবেচে কি ? আমি কি একটা বলতে যাচ্চি, আমাকে যে সঙ্গে করে এনেছিল সে বললে—ইনি পল্লীকবি ঝড়, মল্লিক। বড় মল্লিকের 'ভাব’ শোনেন নি ? আর একজন পার্শ্বচর লোক বললে—এ জেলার বিখ্যাত লোক। অনেক পয়সা রোজগার। দশে মানে, দশে চেনে । আমি ভালু করে লোকটার দিকে চেয়ে দেখলাম। এতক্ষণ ওর দিকে তেমন করে চাইনি, ভেবেছিলাম এই গঞ্জের পেটমোট ব্যবসাদার । এবার আমার মনে হোল লোকটা সরল প্রকৃতির দিলদরিয়া মেজাজের কবিই বটে। আমি নমস্কার করে বললাম—আপনিই সেই পল্লীকবি ? বড় মল্পিক হেসে বললে—সবাই বলে তাই। এলো ভাই বলে এখানে। কিছু মনে করো মা ।