বাড়ীতে কেউ নেই। ডিসপেনসারির কাজ লেরে এইমাত্র বাজার থেকে ফিরে এসেছি ।
পাড়ার সনাতন চকভি বাইরের বৈঠকখানায় বলে আছে।
বললাম—কি সনাতনদা, খবর কি ?
সনাতন উত্তর দিল—এমনি করে শরীরটা নষ্ট কোরো না । বেলা একটা বেজে গিয়েছে। এখনও খাওয়া-দাওয়া কর নি ? *
সনাতনের কথা শুনে হাসলাম একটুখানি। আমি জানি, সনাতন আমার মন যোগাবার জন্যে একথা বলছে ; সে ভালই জানে, আমার কেন দেরি হয় ডিসপেনসারি থেকে উঠে আসতে। সকাল থেকে নিঃশ্বাস ফেলবার অবকাশ পাই কখন ?
বললাম—রুগীর ভিড় জানো তো কেমন ?
সনাতন মুখখানাতে হাসি এনে উজ্জল করবার চেষ্টা করে বললে—তা আর জানি নে ? তোমার মত ডাক্তার এ দিগরে ক'টা আছে ? ওষুধের শিশি ধোওয়া জল খেলে রোগ লেরে
যায়—
—চা খাবে সনাতনদা ?
—পাগল ? এখন চা খাবার সময় ?
—ত হোক, চলুক একটু।
আমার নিজেরও এখন তাড়াতাড়ি স্নানাহার করবার ইচ্ছে নেই। সনাতনের সঙ্গে বাইরের ঘরে বলে একটু আড্ডা দেওয়া যাক। ডিসপেনসারির চাকর বুধে গোয়ালাচাবি নিয়ে সঙ্গে এসেছিল, তাকে বললাম,—তোর মাকে বল গিয়ে দু’ পেয়ালা চা করে দিতে।
সনাতন চক্কত্তি গ্রামের গেজেট। সে কেন এখানে এসেছে এত বেলায়—ঠিক বোঝা
क्षitघ्छ् नी ।
চা খেতে খেতে সনাতন বললে—আৰুছল ডাক্তারের পসার—বুঝলে ভায়া—
হাসি-হাসি মুখে সে আমার দিকে চেয়ে রইল।
আমি বললাম--ব্যাপার কি ?
—আর কি ব্যাপার—একেবারে মাটি !
—কে বললে তোমাকে ?
—আমি বলছি। আমি জানি যে—
—কেন, সে তো ভাল ডাক্তার—
—রামোঃ, তোমার কাছে ? বলে সেই ‘টাদে আর কিলে’ ! হোমিওপ্যাখির জল কে খাবে তোমার ওষুধ ছেড়ে । বলে ডাকলে কথা কয়। রামু তাতীর বউটার কি ছিল ? হিম হয়ে গিয়েছিল তো। তুমি গা ফুড়ে না ওষুধ দিলে এতদিনে দোগেছের শ্মশান-সই হোতে হোত ।
নিজের প্রশংসা শুনতে খারাপ লাগে না, তা যেই করুক। তবুও আমি অন্য একজন ভাক্তারের নিঙ্গাবাদ আমার সামনে হোতে দিতে পারি না। আমাদের ব্যবসার কতকগুলো
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৩
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
