পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢छTांडिब्रिश्नs ২৮১ —চল । যাব না কেন ? বা:– এদিকে এরা ছাড়ে না –সে কি সার ? এখন গেলে আর কি ওরা না খাইয়ে ছাড়বে ? যাবেন না । আমি বললাম, কিছু না, বেশি দেরি হবে না। এখুনি আসছি । দেশের লোক, ধরেছে— ওদের সঙ্গে ওদের বাসায় গেলাম । মুশকিল, ছ নম্বরের বাসা, কম মাইনের লোকের বাস । আমাকে ওরা নিয়ে গিয়ে ঘরে বসালে ৷ দুখানা ছোট ঘর, একটা রান্নাঘর, একটা বারান্দা—এই হল দু-নম্বর কোয়াটার্স । বৈশাখ মাসের দারুণ উত্তাপে সে ঘরের অবস্থা যে কি, তা না অন্তভব করলে বুঝিয়ে বলা কঠিন। জেলখান। এর চেয়ে ভাল। নড়বার-চড়বার জায়গা নেই। আলো বাতাস আসে না, গপ ধরে যায়। একখানা ঘর একটু সাজিয়ে রেখেছে, একখানা ফর্স চাদরও পেতে রেখেছে বিছানায় । একটা সস্তা টাইমপিস ঘড়ি কিনে ছোট একটা টেবিলে রেখে দিয়েছে। ওর বাপ হীরু জেলেকে আমরা বাল্যকালে দেখেছি বঁশের দোয়াড়ি তৈরী করে মাছ ধরত, হাটে মাছের ঝুড়ি নিয়ে গিয়ে মাছ বিক্রি করত। কানাইয়ের মা টিনের ক্যানেস্তায় ধান সেদ্ধ করত বাড়ীর উঠোনের আমতলায়। বড় গরিব ছিল ওরা । কানাইয়ের বেী এসে আমাকে প্রণাম করলে । বললে—বস্কন, একটু চা করে দেব ? আশ্চর্য, এরা চ খেতে আরম্ভ করেছে এখানে এসে! কানাইয়ের মা আহলাদের স্বরে বললে— কানাই একটা ঘড়ি কিনেছে দেখেছ দাদাঠাকুর । সেই সস্তা টাইমপিস ঘড়িট । আমি সেটা হাতে নিয়ে ভাল করে নাড়িচাড়ি, দেখি । খুব প্রশংসা করি ঘডির । বললাম—বাঃ, বেশ টেবিল-চেয়ার দেখছি যে ! —কানাই সব করেছে দাদাঠাকুর । দিব্যি সাজানো ঘর। ওখানামক টাঙানো ? —বৌমার হাতে তৈরি । ঝিল্প) দিয়ে তৈরি ফুল । —বা, বেশ করেছে বৌমা । , —হবে না ? বেশ ভাল ঘরের মেয়ে যে ! গান গাইতে জানে। দিব্যি গান, হ্যা। —গান ? —ষ্ঠা, বাজনার বাক্স বাজিয়ে— —হারমোনিয়াম ? এটা সত্যি আশ্চৰ্য্য কথা হল। —শোনবা গান দাদাঠাকুর ? ও বৌমা, চা করে গান শুনিয়ে দাও দাদাঠাকুরকে । আজ আমার কত আনন্দের দিন । দাদাঠাকুর পায়ের মাটি বেড়েছেন আমার ঘরে । —ন, বড় খুনী হলাম কানাইয়ের মা। কানাই যে এত উন্নতি করবে সব রকমে, তা আমি জানতাম না।