මN” বিভূতি-রচনাবলী
ভরহেচ, নগরের বিশাল তোরণ অতিক্রম ক’রে প্রশস্ত রাজপথে পদচারণা করতে-করতে প্রাসাদের মৰ্ম্মর খচিত প্রশস্ত অলিন্দে গিয়ে সোজা উঠে পড়ি। এত-বড় নগরীতে জনসমাগম তেমন যে খুব বিপুল তা নয়। এ-পর্য্যন্ত পুড়িয়ে খেতে একটি প্রাণীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয় নি ।
এখন দেখছি, ওই যে একটি বুড়োমত মানুষ বৈঠকখানায় বসে আছে বটে.
দরজার কাছে দাড়িয়ে বল্লাম, থোড়া জল পিনে মাংতা । 靜
বৃদ্ধলোকটি আমার দিকে চেয়ে দেখেই ব্যস্ত হয়ে উঠলো—ও, আপ, পানি পিয়েঙ্গে ? এই ভগীরথ, ই-ধার আও–আপ আইয়ে বৈঠিয়ে—আপ বাঙালী ? আস্বন, আমুন-বসেন । আমার বড়বাজারে কারবার ছিল । বাংলা জানি, বসেন ।
এইভাবে রামলাল ব্রাহ্মণের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ।
—এই ভগীরথ, থোড়া পানি তো আগে পিলাও বাবুজিকো। চা খান ?
—আজ্ঞে ই্যা ।
—এই ভগীরথ, সাবিত্রীকে বোলো, চা বানানেকে লিয়ে । ভালো হয়ে বস্থন । আপনার নাম কি আছে ?
—আমার নাম হিতেন্দ্রনাথ কুশারী—দেশ বসিরহাট, চব্বিশ পরগণ ।
—কুশারী ? ব্রাহ্মণ আছে তো ? না কি আছে ?
—ব্রাহ্মণ, রাঢ়ীশ্রেণী ।
—ঠিক আছে। নোমোস্কার । আমিও ব্রাহ্মণ আছি, আমার নাম রামলাল ব্রাহ্মণ, দেশ ভরহেচ, নগর, বিকানীর ।
—6, তাই বুঝি•••
—ঠিক ধরিয়েছেন । বাঙালী-জাত বড় বুদ্ধিমান আছে। কথা গিনেসে মালুম করলেতা হ্যায়—এ জায়গাটা আচ্ছা লাগে । বন আছে চারদিকে । গোলমাল নেই। তুলসীজি বলিয়েছেন, দণ্ডক-বনের শোভা কি রকম আছে ?—
শোভিত দণ্ডক বন কি রুচি বনী ডতিন ডাতিন স্বন্দর ধনী
কুছু বুঝলেন? দণ্ডক-কাননের বড় শোভা আছে। বৃচ্ছ, ফল, পাক্তিসে, খুব সুন্দর। রামায়ণের কথা আছে। তা এই জায়গাটা তেমনি লাগে হামার। দেড়শো বিঘে লিয়েছি এখানে বহুৎ স্ববিস্তাসে। তিশ, টাকা বিঘা ৷
—বলেন কি !
—কেন না হোবে ? বাঘ ভালু ছাড়া এখানে বাস করবে কে ?
—কার জমি ?
–শিরোহির এক মৌজাদারের। ধরতীনারান মুন্সি, পুরুলিয়ার কারবার-ভি আছে। ওখানেই থাকে ।
জল এলো। আমি বাইরে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিয়ে জল পান করলাম। শরীর ঠাণ্ড
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩৭৮
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
