পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুশল •ोइोप्ने {}•wè রামগতির স্ত্রীর চোখে জল এল। সে যে সংসারে বধুরূপে ঢুকেছিল সেখানকার অবস্থা এদের চেয়ে অনেক সচ্ছল, অনেক ভালো। রামগতির অংশে ত্রিশ বিষে জমি ছিল প্রজাবিলি। কিছু খাজনা এবং কিছু ধান পাওয়া যেতে । খাওয়া-দাওয়ার অবস্থাও ছিল অনেক ভালো । কিন্তু রামগতির স্ত্রী শিশুপুত্র নিয়ে সেখানে থাকতে সাহস করে নি বলেই দাদার আশ্রয়ে এসে পড়লো । শোড়া থেকেই সে ভুল করেছিল । গুলিখোর দাদার ঘরে সবদিন চাল থাকে না। মামীম রামগতির ছেলে সতুকে বলে— তোর মামার কাছে গিয়ে বল, ঘরে চাল নেই—নইলে খাওয়া হবে না— সতু গুলির আড্ডার দোরের কাছে ভয়ে ভয়ে এসে দাড়িয়ে বলতেী—ও মামা ? কেউ কথা বলে না । আড্ডার রকম দেখে মৃতুর মুখ দিয়েও কথা বেরুতে চাইতো না । সেখানে দেওয়ালে হেলান দিয়ে সারি সারি লোক বসে আছে—মুখে তাদের লম্বা প্যাকাটির নল, কলসীর কানাভাঙার ওপর বসানো থেলো ইকোর সঙ্গে সেই নল লাগানো । কারো বিশেষ হশ নেই। চোখ বোজানো অবস্থায় গল্প চলচে ওদের মধ্যে—সতু বুঝতে পারতে না সে সব গল্পের মানে । তখন তার বয়স আট ন বছর হবে । মামাকে আবার ডাকতো—ও মামা ? মামা আস্তে আস্তে চোখ চেয়ে বলতেী—কে রে ? —আমি সতু । মামীম পাঠিয়ে দিলে। ঘরে মোটে চাল নেই । —চাল নেই ? আচ্ছ বোস্। এমন চাল খাওয়াবো তোর মামীকে বুঝতে পারবে চাল কাকে বলে ! আবার আধ ঘণ্টা । মামার সাড়াসংজ্ঞা নেই। বেলা হয়ে যাচ্চে, মামী তাত চড়াবে কখন ? তারও খিদেতে পেট জলচে । সে আবার ডাক দিলে—ও মামা ? —কে রে ? —আমি সতু। চালের পয়সা দাও মায়া। ঘরে চাল নেই কিছু। —দাড়া। হাতী বিক্রি করি আগে । হাতীটা বিক্রি করেই তোকে চাল তো চাল— ঘরের মধ্যে ও-কোণ থেকে কে একজন টেনে টেনে বল্পে—হাতী কেন দাদা, আমবাগানটা বিক্রি করে স্থাও না— ● আরও কিছুক্ষণ কেটে গেল । সতু ডাকলে—ও মামা ? —কি রে ? —চালের পয়সা দাও— মামা ট্যাক থেকে দু অনা পয়সা বার করে ওর দিকে ছুড়ে দিয়ে বল্লে--যা—আর নেই । ওই দিয়ে চালাতে বলগে যে করে হোকৃ— এই রকম ছিল মামাবাড়ীর সংসার ।