পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী واك ه 8 তুলতে বলে তোমার বাবা । আমি মাটি খুড়ে স্থাখলাম একটা পেতলের বোগনোর কানা দেখা যাচ্ছে। আমি তার ওপর অমনি মাটি চাপ দিয়ে ফেল্লাম। কুবুদ্ধি চাপলে মাথায় । তোমার বাবাও দ্যাখলে না । ভাবলে, আমি অনেক দিনের বিশ্বাসী লোক, আমি কি আর ফাকি দেবো? রাতারাতি সেই ট্যাকার বোগনো আমি তুলে নিয়ে গিয়ে—তোমার কাছে বলতি লজ্জা করে—আমার একবিটি ইয়ে ছিল—তার হাতে নিয়ে গিয়ে দেলাম। সে ট্যাক আমার ভোগে হয় নি বাবা। সেই মেরে দেলে ট্যাকট। দিন পনেরো পরে ট্যাক নিয়ে সে গঙ্গার ওপারে তার বোন-ভগ্নিপতির কাছে চলে গেল। তোমরাও এখান থেকে চলে গেলে । আমার সেই থেকেই খারাপ অবস্থা, এখন আর খেতে পাইনে । যতদিন শরীরে শক্তি ছেল, জন খেটে পেটের ভাত চালিয়েচি । এখন বুড়ে হয়ে গিইচি, রোগগ্ৰস্ত, আর খেতে পাইনে । আমার এমন হবেই যে, বিশ্বেসঘাতুকি কাজ করিচি, পুরনো মনিবের ট্যাক চুরি করিচি, আমার এমন হবে না তো কর হবে বাবা । আজ তোমার কাছে বল্লাম, যদি তাতে পাপের বোঝা কমে---আর, আমার হয়ে এল, খোকন, বড় জোর দুটো একটা মস–তোরে যে দ্যাখলাম মরবার আগে— সতু কিছুক্ষণ সেখানে বসে দু একটা সাস্তুনার কথা ওকে বল্লে। তারপর পকেটে হাত দিয়ে যা কিছু ছিল, ওর বিছানার পাশে রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে এল । জওহরলাল ও গড, সেদিন হাওড়া স্টেশনে সকাল হইতেই ভিড় হইবে এই রকম একটা আভাস পাওয়া গিয়াছিল। সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় বড় বড় করিয়া খবর বাহির হইয়াছিল জওহরলালজি সেদিন বম্বে মেলে কলিকাতায় আসিতেছেন । আরও একটি খবর বাহির হইয়াছিল, ভগবান স্বয়ং পাঞ্জাব মেলে কলিকাতা আসিতেছেন, হিমালয়ের কোন একটা স্থান হইতে । এই পৰ্য্যন্ত । টাইম টেবিল দেখিয়া জানিলাম উভয় ট্রেন আসিয়া পৌছিবে দুঘণ্টার ব্যবধানে। বম্বে মেল আগে আসিবে, বেলা সাতটা সাড়ে সাতটার মধ্যে । , গিয়া দেখি হাওড়া স্টেশন পৰ্য্যন্ত অগ্রসর হওয়া সম্পূর্ণ দুঃসাধ্য ব্যাপার। স্ট্র্যাও রোডের পর হাওড়া পুলের দিকে এক পা-ও বাড়ানো সম্ভব নয়। মনে মনে ভাবিলাম, ভগবান ও জওহরলাল একই দিনে যখন কলিকাতা আসিতেছেন, তখন এমন ভিড় হওয়া স্বাভাবিক বটে । জওহরলালজি আসিবার কথায় তত বিস্মিত হই নাই, কারণ তিনি ইতিপূৰ্ব্বেও কলিকাতায় আসিয়াছেন। কিন্তু ভগবান কখনও কোথাও আসেন না, তিনি নিরাকার, এ পর্য্যস্ত র্তাহাকে কেহ দেখে নাই বলিয়াই শুনিয়াছি । তিনি হঠাৎ অস্ত পাঞ্জাব মেলে কেন যে