পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जtष छल २े —দুধ আমি বাড়ী থেকে আনছি। খাওয়ার ব্যবস্থা না করলে কষ্ট হবে আপনার । কখন খেমটা শেষ হবে, তখন বাড়ী যাবেন—সে অনেক দেরি হয়ে যাবে। খাবেন কখন ? সে হয় না | এখানকার বাজারের মধ্যে ভূষণ দা ও নেপাল প্রামাণিক—এর সব মাতব্বর লোক। ওরাই চাদা ওঠায়, বারোয়ারির আয়োজন করে বছর বছর । পাঁচজনে শোনেও ওদের কথা । আমি যখন এখানে ডাক্তারখানা খুলেচি, সকলকেই সন্তুষ্ট রাখতে হবে আমার। সুতরাং বললাম—তবে তুমি কি করতে চাও? —খানকতক পরোটা ভাজিয়ে আনি আর একটু আলুর তরকারি। —তার চেয়ে ডাক্তারখানায় স্টোভে দুটি ভাত চড়িয়ে দিক আমার কম্পাউণ্ডার । —সে অনেক হাঙ্গামা । কোথায় হাড়ি, কোথায় বেড়ি, কোথায় চাল, কোথায় ডাল ! একটু পরে নেপাল চা করে নিয়ে এল, তার সঙ্গে চাল-ছোলা ভাজা । আমি বললাম— তুমিও বসে, এক সঙ্গে খাই। নেপাল বসে বসে নানারকম গল্প করতে লাগলো। ওর জীবনটা বেশ । শোনাবার মত জিনিস সে গল্প । এ সব বাদলার বিকেলে চালছোলা-ভাঁজার সঙ্গে মজে ভাল । বললাম—নেপাল, দুটি বিয়ে করলে কেন এক সঙ্গে ? —একসঙ্গে তো করি নি, এক বছর পর পর । —কেন ? —প্রথম পক্ষের বেী আমাকে না বলে বাপের বাড়ী পালিয়ে গেল, সেই রাগে তাকে ত্যাগ করবো বলে যে-ই দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছি, অমনি প্রথম পক্ষের বেী ও স্বৰ্ড স্কুড় করে এসে ঢুকলো সংসারে। আর নড়তে চাইলে না, সেই থেকেই আছে । দুজনেরই ছেলেমেয়ে হচ্চে। এখন মনে হয়, কি ঝকমারিই করেছি, তখন অল্প বয়স, সে বুদ্ধি কি ছিল ডাক্তারবাৰু? এখন পাচ পাচটা মেয়ে, কি করে বিয়ে দেবো সেই ভাবনাতেই শুকিয়ে যাচ্ছি —আর একটু চা করি ? —বেশ । 尊 দুজনেই সমান চা-খোর। রাত আটটা বাজবার আগে আমাদের দু-তিন বার চা হয়ে গেল। নেপাল বসে বসে অনেক স্বখ দুঃখের কাহিনী বলে যেতে লাগলো। কোন পক্ষের বে ওকে ভালবাসে, কোন বোঁ তেমন ভালবাসে না—এই সব গল্প। —প্রথম পক্ষের বৌটা সত্যিই ভালো। সত্যিই ভালোবাসে। দ্বিতীয় পক্ষে বিয়ে করেছিলাম বটে কিন্তু ও আমার ওপর রাগ করে নি। —ছোটবউ কেমন ? —ওই অমনি একরকম। স্ববিধে না । —কেন ? —তেমন আট নেই কারে ওপর। আমার ওপরও না। থাকতে হয় তাই থাকে,