পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अटैथ छल \O& অনেক রাত্রে নাচ বন্ধ হোল। গোবিন্দ দা বললে—ডাক্তারবাৰু, বাকী রাতটুকু গরীবের বাড়ীতেই শুয়ে থাকুন, রাত তো বেশি নেই, সকালে চা খেয়ে— আমার মন যেন কেমন চঞ্চল। কিছু ভাল লাগচে না। কোথাও রাত কাটাতে আমার ইচ্ছে নেই। মাঝিকে নিয়ে সেই রাত্রেই নৌকো ছাড়লাম। গভীর রাত্রের সজল বাতাসে একটু ঘুম এল ছইয়ের মধ্যে বিছানায় শুয়ে। সেই অল্পবয়সী মেয়েটি আমার চোখের সামনে সারা রাত নাচতে লাগলো। এক একবার কাছে এগিয়ে আসে, আমি রুমাল বেঁধে প্যাল দিতে যাই, সে তখুনি হেসে দূরে সরে যায়, আবার কিছুক্ষণ পরে কাছে এগিয়ে আসে । মাঝির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। মাঝি বলছে—উঠুন বাবু নৌকো ঘাটে এসেচে। উঠে দেখি ওপারের বড় শিমূল গাছটার পিছনে স্থৰ্য্য উঠেছে, বেলা হয়ে গিয়েচে। দীচু বাড়ই ঘাটের পাশে জেলে-ডিডিতে বসে মাছ ধরচে, আমায় দেখে বললে—ডাক্তারবাৰু রাক্তিরি ডাকে গিয়েছিলেন ? কনেকার রুগী ? পরদিন মঙ্গলগঞ্জে যাবার দিন নয়। স্বরবালা বললে— ওগো আজ ও পাড়ার অজিত ঠাকুরপোর মেয়েকে দেখতে আসবে। তোমাকে সেখানে থাকতে বলেচে । আমি বললাম—আজ আমার থাকা হবে না । —কেন, আজ আবার সেখানে ? শক্ত রোগী আছে বুঝি ? —না। ওদের বারোয়ারি লেগেচে । আমি না থাকলে চলবে না । মনে মনে কিন্তু বুঝলাম, কথাটা খাটি সত্যি নয়! আমার সেখানে না থাকলে খুব চলবে। ওদের আছে প্রেসিডেন্ট রামহরি সরকার, ক্লাইভ স্ট্রীটের রঙের দোকানের মালিক গোবিন্দ দা, কলাধরপুরের প্রহ্লাদ সাধুখী, কুঁদিপুরের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ চৌধুরী, আরও অনেকে। আমাকে ওরা যেতেও বলে নি । এই বোধ হয় জেনে শুনে প্রথম মিথ্যা কথা বললাম মুরবালাকে । আমায় যেতে হবে কেন তা নিজেও ভাল জানি নে । মনে মনে ভাবলাম—নাচ জিনিসটা তো খারাপ নয় । ওটা সবাই মিলে খারাপ করেচে। দেখে আসি না, এতে দোষটা আর কি আছে ? সকালে সকালে চলে আসবে। দীচু বাড়ই আজও জিজ্ঞাসা করলে—বাবু, রুগী দেখতে চললেন বুঝি ? ওর প্রশ্নে আজ যেন বিরক্ত হয়ে উঠি । যেখানেই যাই না কেন তোর তাতে কি রে বাপু ? তোকে কৈফিয়ৎ দিয়ে যেতে হবে না কি ? মুখে অবিপ্তি কিছু বললাম না। মাঝিকে বললাম—একটু তাড়াতাড়ি বাইতে কি হচ্চে তোর ? ওদিকে আসর যে হয়ে গেল— - খেমটার প্রথম আসরেই আমি একেবারে সামনে গিয়ে বসলাম। আবদুল হামিদ আজও আমার পাশে বসেছে। অন্যান্য সব বিশিষ্ট এবং সম্বাস্ত ব্যক্তি যারা কাল উপস্থিত ছিল, আজও