পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ኅ8 বিভূতি-রচনাবলী আমি ভুল করেছি। পান্নার অদৃপ্ত উপস্থিতিতে এ ঘরের বাতাস ভরে আছে—হঠাৎ তার সেই অদ্ভুত ধরনের দুষ্টুমির হাসিটি ফুটে উঠলো আমার সামনে । মন বড় চঞ্চল হয়ে উঠলো । সে কি সাধারণ চঞ্চলত ? অমন যে আবার হয় তা জানতাম না । @ পাল্লা এখানে ছিল সে গেল কোথায় ? সেই পান্না, অদ্ভুত ভঙ্গি, অদ্ভুত দুষ্টুমির হাসি নিয়ে। তাকে আমার এখুনি দরকার। না পেলে চলবে না, আমার জীবনে অনেকখানি জায়গা যেন ফাকা হয়ে গিয়েছে, সে শূন্যতা যাকে দিয়ে পুরতে পারে সে এখানে নেই— কতদূর চলে গিয়েছে। আর কি তাকে পাবো ? পান্নার অদৃশ্ব আবির্ভাব আমাকে মাতাল করে তুলেচে। ওই চেয়ারটাতে সেদিন সে বসেছিল। এখান থেকে ডিসপেনসারি উঠিয়ে দিতে হবে । 螺 পকেট খুঁজে দেখি মোটে দুটো টাকা। বিষ্ণু সাধুখার দোকান পাশেই । তাকে ডাকিয়ে বললাম—দশটা টাকা দিতে পারবে ? —ডাক্তারবাবু, প্রাতঃপ্রণাম । কোথায় ছিলেন ? —বাড়ী থেকে আসচি ৷ টাকা ক’টা দাও তো ? —নিয়ে যান । তার দোকানের ছোকরা চাকর মাদার এসে একখানা নোট আমার হাতে দিয়ে গেল । আমি সাইকেলখানা ডিসপেনসারির মধ্যে চাবি দিয়ে রেখে স্টেশনে চলে এলাম । আড়াই ক্রোশ রাস্ত হঁটিতে হল সেজন্যে । পান্না আমায় দেখে অবাক। সে নিজের ঘরের সামনে চুপ করে একথান চেয়ারে বসে আছে—কিন্তু সাজগোজ তেমন নেই। মাথার চুলও বাধা নয়। আমি হেসে বললাম—ও পান্না— —তুমি! —কেন ! ভূত দেখলে নাকি ? —তুমি কেমন করে এলে তাই ভাবছি ! —কেন আসবো না ? —সত্যি তুমি আমার এখানে এসেচ ? পান্না যে আমাকে দেখে খুব খুশী হয়েচে সেটা তার মুখ দেখেই আমি বুঝতে পারলাম। ওর এ আনন্দ কৃত্রিম নয়। পান্না আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে থাটের ওপর বসিয়ে একখানা হাতপাথ! এনে বাতাস করতে লাগলো। ওর এ যত্ব ও আগ্রহ যে নিছক ব্যবসাদারি নয় এটুকু বুঝবার মত বুদ্ধি ভগবান আমাকে দিয়েচেন। আমি ওর মুখের দিকে চেয়ে দেখলাম বেশ একটু তীক্ষ দৃষ্টি দিয়ে। সে মুথে ব্যবসাদারির ধাজও নেই। আমি বিদেশ থেকে ফিরলে স্বরবালার মুখ এমনি উজ্জল হয়ে ওঠে, কিন্তু স্বরবালার