পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপহলুদ , స్ప్రిలిన কথা শুনলে মা বকবে। জর হচ্ছিল কিছুদিন আগে । —তবে খেও নাম । থাক গে। —না থাবো। তুই তবে বল্লি কেন ? আমি ঠিক খাবে।— এক মুঠো ডাশ করমচা চিবোতে চিবোতে নালু ও নীলি নদীর ধারে এসে দাড়ালো। নালু তো অবাক । কত বড় বিলটা ! কত পদ্ম ফুটে আছে । ওপারে ওরা কি করছে ? মাছ ধরছে ? কি মাছ ? কই, মাগুর ? নলু ডাক দিয়ে বল্লে,—কি দর, ও জেলে কাক ? —মাছ নেবা খুকী ? —দর বলো না । —বাছা বাছা বিলির কই, তিন টাকা সের। আর মাগুর মাছ সাড়ে তিন টাকা । দাম শুনে কিনবার বাসনা উবে গেল সরবালার । বাপ রে, মাসে মা মোটে পাচ টাকা মাইনে পেতে, আমি কিনবো তিন টাকা সেরে মাছ! সে পাচ টাকাও আজকাল আর পায় না ! হঠাৎ বাগ দিবোঁ বল্লে,—নালুম, মাছ ধরবো ? —তুমি ? —তুমি আর আমি। একজনের কাপড় খুলতে হবে । তুই ছেলেমানুষ, কাপড় খুলে ফেল । —যা: ! —কে দেখছে ? কোন লোক নেই এ দিগরে । বিল আর মাঠ । নালুর কাপড় খুলে দিয়ে বাগদি-বেী ওকে জলে নামালে। ছাকা দিয়ে দুজনে মাছ ধরতে লাগলো। পদ্ম গাছের তলায় আর শেওলার দামের মধ্যে। বৃথা পরিশ্রম। আধ ঘণ্ট জলকাদা মাথাই সার হ’ল । সন্ধ্যা হবার দেরি নেই। বকের দল ছায়াভরা নীল আকাশের গা বেয়ে পাল্লার বড় বিলের দিকে চলেছে । বিলের উত্তর পাড়ে বন-জাম গাছের ডালে ডালে কালো বাদুর ঝুলছে। ঘুরি পোকা ঘুর্বৃ" শব্দ করে ডাক শুরু করে দিয়েছে ঘাসের বনে । নালু বল্পে, চল নীলি । মা বকবে—এমন সময় তার পায়ের তলায় পদ্মবনের মধ্যে কি একটা জিনিস পিছলে গেল, সেটাকে পা দিয়ে চেপে ধরেছিল অন্তমনস্ক হয়ে । চক্ষের পলকে নালু চেচিয়ে উঠল,—সাপ | সাপ —আমাকে খেয়ে ফেলে। ওম–ওম -७श्-खे-ए নীলি লাফিয়ে এল ওর কাছে—ভয় কি ? ভয় কি ? কোথায় সাপ ? —আমাকে একেবারে থেয়ে ফেলেছে—ও নীলি—আমি মরে গেলাম—মাকে বোলো— পা দিয়ে চেপে ধরিছি—উন্থহু— নীলি জলে ডুব দিয়ে তার নিজের প্রাণ তুচ্ছ করে নালুর পায়ের তলা দেখতে গেলো এবং পরক্ষণেই প্রায় আধসের-আড়াইপোয়া ওজনের মস্ত একটা মাগুর হাতে তুলে ভেসে উঠলো, হাফাতে ইফাতে হাসিমুখে বলে,—এই দেখো তোমার সাপ—মাগুর মাছে কাটা হেনেছে। আর ও ভাবছে সাপে খেয়ে ফেল্লে—সাপ অত সোজা নয়— —দেখি, দেখি । ওঃ, এ যে মস্ত বড় মাগুর— নালুপা দিয়ে কাদার মধ্যে সেটাকে চেপে ধরাতে মাছটা উপরি উপরি কাটা হেনেছে। পা টনটন করছে ওর। মাছটা ডাঙায় তুলে এনে ওর সব যন্ত্রণ সেরে গেল। ওরা অন্ধকার বাশবনের আমবনের পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরলো। নীলি বলে,—মছটা তুমিই নেও সবটা নালু। তোমাকে কাটা হেনেছে,—আর তুমিই পা