পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপহলুদ &ፅ ጳ কাশী কবিরাজ বেশিক্ষণ শোয়নি, এমন সময় সে দেখল ঘোমটাপরা একটি বৌ হনহা করে মাঠের দিক থেকে এসে দেউড়ির মধ্যে দিয়ে জমিদার-বাড়ি ঢুকচে । কাশী খুব আশ্চৰ্য্য হয়ে গেলো। এত রাত্রে বাইরের মাঠ থেকে এসে বাড়ি ঢুকলো কে ? ভদ্রলোকের ঘরের সুন্দরী বধু বলেই মনে হলো, যতটুকু দেখেছে তা থেকেই । যাক্ । সে এসেছে কবিরাজি করতে, অতশত খোজে তার কি দরকার ? যে যা ভালো বোঝে করুক । আমি বল্লাম—রাত তথন কত ? —রাত একটার কম নয়, বরং বেশি । —যেদিক থেকে এলে, সেদিকে কোনো লোকালয় নেই ? —না মশাই । ফাক মাঠ অনেকখানি পর্য্যস্ত, তারপর কোদালে নদী । কোদালে নদীতে গরমকালে জল থাকে না । হেঁটে পার হওয়া যায়—তার ওপারে বলরামপুর গ্রাম। —আপনি কি করে বুঝলেন ভদ্রবংশের মেয়ে ? —হাত-পায়ের যতটুকু খোল, ধবধবে ফরসা । আধ-জ্যোৎস্না রাত, আমি দিব্যি টের পাছি —মুখখানা অবিশুি ঘোমটায় ঢাকা ছেলে । (* —বাড়ির মধ্যে ঢুকে যাবার সময় অন্ত কোনো লোক সেখানে ছিলো ? —না । —আপনাকে টের পেয়েছিলে ? —কোনদিকে না চেয়ে হনহন করে বাড়ির মধ্যে ঢুকে গেল। কাশী কবিরাজ নিবিরোধী ভাল লোক, সে জলের গেলাস তুলে খানিকটা জল খেয়ে মশারি খাটিয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু নানা চিন্তায় ঘুম আর আসে না, বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করতে লাগলো। লোকে বাড়িতে চিকিৎসক ডাকে ঘুমুবার জন্তে নয়। কাশী কবিরাজ অভিজ্ঞ লোক, দায়িত্ব বোধ তার যথেষ্ট, সে অবস্থায় তার চোখে ঘুম আসে কি করে ? মিনিট খানেক পরে কাশী হঠাৎ দেখল, সেই বৌটি তার পাশের দেউড়ি দিয়ে আবার বার হয়ে যাচ্ছে। বিছানা ছেড়ে সে তড়াক করে উঠে পড়ল। বৌটি ক্রমে দূর মাঠের দিকে চলে যাচ্ছে। জ্যোৎস্নায় তার সাদা কাপড় দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আমি বল্লাম—মাঠের দিকে গেলো এক ? —একদম একা। আর অত রাত | —আপনি কি ভাবলেন ? —আমি আর কি ভাববো মশাই, একেবারে অবাক । এত রাত্রে একটি সুন্দরী মেয়ে এমন ভাবে যে নির্জন মাঠের দিকে চলে যেতে পারে, তা কখনো দেখিওনি । কাশী কবিরাজ সাত-পাচ ভাবছে, এমন সময়ে বাড়ির মধ্যে থেকে একজন ছুটে এসে বল্লে —ণীগগির আমুন, কবিরাজ মশাই, রোগী কেমন করচে । কাশী গিয়ে দেখে, রোগীর অবস্থা সত্যই খারাপ। কিন্তু হঠাৎ এত খারাপ হওয়ার কথা তো নয়। যাহোক, তখনকার মত ব্যবস্থা করতে হোলো। অনেকক্ষণ খাটুনির পরে রোগী খানিকটা সামলে উঠলো। তখন আবার এসে শুয়ে পড়লো কাশীনাথ বাইরের দেউড়ির ঘরে । পরের দিনমান রোগীর অবস্থা ক্রমশ ভালোর দিকেই চললো। জমিদারবাবুর মন বেশ ভালো—প্রথম দিন বড়ই যেন মুষড়ে পড়েছিলেন । এমন কি কবিরাজের সঙ্গে বসে দুপুরের পর খানিকক্ষণ পাশাও খেললেন । কবিরাজকে তাদের বড় দীঘিতে একদিন মাছ “ཐང་ནཱ, যাবার fo. 3. 8-> * ,