পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপহলুদ २b's রামহরি হাজার হোক, ওস্তাদ বর্শেল তো ! অক্ষ্য হয়ে বলেন—মাছটার নিতান্তই তা হোলে মরণ ছিল। হরকওলা বড়শিতে পাচ সের রুইমাছ ওঠে, এ কখনো সম্ভব হয় না । তোদের ও ছেলেখেলা করতে গিয়ে এত বড় মাছটা জুটে গেল অমনি অমনি—নইলে ও-মাছ হরকওলা ছিপে ডাঙায় ওঠানো তোদের সাধ্যি ছিল ? ওই যে বল্লাম, মাছটার কপালে নিতান্তই মৃত্যু ছিল আজ ! ि বাড়ি ফিরে রামহরি জ্যাঠার বাড়ি আমরা সের দেড়েক কাটা মাছ আর মুড়োটা পাঠিয়ে দলাম । কাদা একঘেয়ে গ্রাম্যজীবনের মধ্যে হঠাৎ শোনা গেল আমাদের পাশের বাডির হামাকান্ত চক্কত্তির বিয়ে । খামাকান্ত চক্কত্তি আমার কাকা হন, অবিশুি গ্রামসম্পর্কে। হামাকাকার বয়েস কত তা জানিনে, তিনি নাকি কলেজে পড়েন কলকাতায় না কোথায় । গ্রামে আসেন মাঝে মাঝে দেখতে পাই । বিয়ে হচ্চে আমাদের গ্রামের কাছে নসরাপুর। নসরাপুর গ্রামের বীরেশ্বর ভট্চাজের মেয়ে। বীরেশ্বর ভট্চাজকে দেখেছি, বুড়োমানুষ, ঐ গ্রামেরই পাঠশালার পণ্ডিত । আমাদের গায়ে এসেছিলেনও বারকয়েক । বিয়ে হবে সামনের সোমবারে । হৈ হৈ পড়ে গেল পাড়ার ছেলেদের মধ্যে । আমাদের দল ঠিক করলে একটা উৎসব করতে হবে এই বিয়ের দিনে। আমার উৎসাহট সব চেয়ে বেশি । আমি ভেবেচিন্তে দক্ষিণ মাঠের বিলের ধার থেকে কতকগুলো পাকাটি নিয়ে এলাম এবং পথের ধারের প্রত্যেক গাছে এক গাছ করে পাকাটি নোনার ডালের ছোট দিয়ে বধিলাম । হরি জ্যাঠামশায় দেখে বল্লেন—ও কি হচ্চে ? বড় বড় মোটা কাচের পরকলা বসানো চশমার ভেতর দিয়ে দেখি হরি জ্যাঠামশায় আমার দিকে কটমট করে তাকাচেন । ভয়ে ভয়ে গাছ থেকে নেমে পড়লাম । ーマ向ーsーリー —কি ? —বাজি আলো করবো শুমাকাকার বিয়েতে। তাই পাকাটি বাধচি। —ইঃ ! যত ছেলেমাচুষি । এই একটা সরু পাকাটি জেলে আলো হবে ? কতক্ষণ জলবে ওটা ? —যতক্ষণ হয় । —ছাই হবে । বুদ্ধি কত ! ও কখনো জলে ? হরি জ্যাঠামশায় চলে গেলেন । আমার রাগ হোল মনে মনে । উনি সব জানেন কিনা ? পাকাটি জলবে না তো কি জলবে ? ক্রমে বিয়ের দিন এসে পড়লো। যেদিন বিয়ের বর রওনা হয়ে চলে গেল, সেদিন পাকাটি জালতে সঙ্গী সতু ও হীরু বারণ করলে। আজ জেলে কি হবে ? যেদিন বর আসবে বোঁ নিয়ে,