পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎকর্ণ ها( en co মত। থৈ থৈ করচে জলরাশি। আমাদের পাড়ায় রামপদর ঘরে বঙ্গাপীড়িত মানুষের আশ্রয় নিয়েচে । ন’দিদি তেল দিলে—আমাদের বাড়ির পিছনে হামাচরণ দাদাদের চারা গাবতলায় স্নান করলাম। বরোজপোতার ডোবা দিয়ে তর তর করে স্রোত চলেচে। ইন্দু রায়ের সঙ্গে সঙ্গে জেলের নৌকো করে খুকুদের চারা আমবাগান দিয়ে গেলুম বেলেডাঙ্গার আইনদির বাড়ি। সেখানে একটু গল্প করে এপারে এলুম। বট অশ্বখের শু্যামবীথির কি শোভা ! সৰ্ব্বত্র জল, বটতলায় সাতার-জল, কিন্তু অপূৰ্ব্ব শোভা হয়েচে বটে ! চড়কতলার বাগানে নৌকো চড়ে গোসাই বাড়ির রাস্ত দিয়ে পাকা রাস্তায় এসে নামলুম। হেঁটে সাড়ে তিনটার সময় বনগ, সন্ধ্যা পৰ্য্যন্ত খুকুদের বাসায় বসে গল্প করি। পূর্ণিমার রাত্রে ব্রজেন বাড়য্যে, সজনী, আমি, অমূল্য বিদ্যাভূষণ, দেবপ্রসাদ ঘোষ এবং সুবল একসঙ্গে বম্বে মেলে খড়গপুর এলুম। হাওড়া স্টেশনে প্রথমেই হাসির ব্যাপার। একজন উঠে বল্পে, আপনারা কে লণ্ডন যাবেন ? আমরা তো হেসে বাচিনে । যাচ্চি মেদিনীপুর বলে কে যাবে লগুনে | সজনী তো হেসে গড়িয়ে পড়ে আর কি ! খড়গপুর নেমে মোটরে মেদিনীপুর গেলাম কঁসাই নদী পার হয়ে । S.D.0. ধীরেনবাবু এসেছিল আমাদের নামিয়ে নিতে। স্তর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ছিলেন সভাপতি, তিনি ও অমূল্য বিদ্যাভূষণ এক গাড়িতে গেলেন—আমি, ব্ৰজেনদা, তারাশঙ্কর এক গাড়িতে। গিয়েই জ্ঞান চৌধুরী উকিলের বাড়ি ডিনারের নিমন্ত্রণ। প্রায় আশি জন লোক নিমন্ত্রিত। ডিনারের পরে ধীরেনবাবুর বাড়িতে আমরা অতিথি হয়ে রইলুম। সকালে সভা হল । রাধাকৃষ্ণণ বিদ্যাসাগর স্মৃতি-মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করলেন, আমি সে সময় একটা তেঁতুল গাছতলার ছায়ার বসেছিলুম। তারপর দেবপ্রসাদবাবু ও চৈতন্তদেবের সঙ্গে নাড়াজোল রাজার গোপপ্রাসাদ দেখে পুরোনো গোপপ্রাসাদে একটা প্রাচীন বাড়ির ধ্বংসাবশেষ দেখতে গেলাম। বেশ সুন্দর জায়গা এই গোপ, খুব উচু মালভূমির মত স্থান, সেগুন ও কেলিকদম্বের বন, বেশ ভাল লাগল। ওখান থেকে র্কাসাই নদীর এনিকাটু দেখতে গিয়ে আমাদের ফটো নেওয়া হল । ধীরেনবাবুর বাড়ি দুপুরে ব্রজেনবাবু, সজনী সবারই নিমন্ত্রণ। বৈকালে আবার মিটিং— তারপর বার হয়ে ঝুণু দাশগুপ্ত বলে একটি মেয়ের গান শুনতে যাওয়া গেল ওদের বাড়িতে। ঝুণুর বাবা এখানকার D. S. P. রাত্রি দুটোর ট্রেনে স্টেশনে এসে ট্রেন ধরলুম, ধীরেনবাবু ট্রেনে তুলে দিয়ে গেলেন। মহালয়ার আগের সোমবারে রেজেষ্ট্রি আপিসে বারাকপুরের বাড়িটা রেজেষ্টি করে নিলাম। রামপদ ও পুটিদিদি এসেছিল। মহালয়ার দিন খুকু ও খুড়ীমাকে কলকাতায় আনলুম। অন্নপূর্ণার ঘাটে নেমে মদনমোহন ঠাকুর দেখে, Zoo, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ও রূপবাণী দেখে রাত দশটার গাড়িতে ওদের নিয়ে ফিরলুম। সেই শনিবারে আবার বাড়ি গেলুম—খুকুদের বাসায় রাত্রে থেয়ে সকালে চালকী। ইন্দু এল। তার সঙ্গে বারাকপুর যাই। এখনও বস্তার জল থৈ থৈ করচে। সমুদ্রের মত। এমন দৃশু কখনো দেখিনি। ਾਂ অনেক ঘটনা ঘটুল। আমি গালুডি গেলুম পূজোর ছুটিতে, সেখান থেকে জর নিয়ে কিরলুম। বারাকপুর গিয়ে আট-নয় দিন ছিলুম। বড় নির্জন, বিশেষ করে আমাদের