পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎকর্ণ لبناني এক মাসে আরও কি পরিবর্তন। স্বপ্রভাকে কি দুঃখুই দিলুম। আজও সে একখানা চিঠি পেয়েচে আমার । তার কথা সৰ্ব্বদাই মনে হচ্চে । শিলং একবার যেতে হবে শীগগির। গত সরস্বতী পূজোর দিন ঘাটশীল গিয়ে তিস্থা, শান্ত, অমরবাবুকে সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ে উঠলুম মুবর্ণরেখা পার হয়ে । ভোরে ডাকলে এসে হরবাবু। তারপর মোটরে আমরা অর্থাৎ বুদ্ধদেব, আমি, রমাপ্রসন্ন, তিন্থ ও বামু গেলাম বনগ। অজিতবাবুর বাড়ি চা খাবার সময়ে S.D.0ও মুন্সেফ এবং মনোজ বস্তু সেখানে। তারপর ঘেটুফুল ফোটার পথের মধ্যে দিয়ে আমরা বনগা গেলুম। একবার মনে হল যেন আমার বাসা আছে এখানে—জাহ্নবী রান্না করচে, স্নান করে গিয়েই খাব । বারাকপুর এলুম। পঞ্চবটতলায় গাড়ি দাড়াতেই ফণিকাক, খাদ্ধ, হরিপদদা এল। এদের দেখে কষ্ট হয়। কি সংকীর্ণ ক্ষেত্রেই পড়ে রয়েচে। পূর্ণতর জীবন অনুভব করলে না। ফণিকাকা বল্লে—আজ গোপালনগরে বড় মারামারি হবে ভোট নিয়ে—দেখতে যাবে না। As if I care for votes ! আমার বাড়ি গিয়ে ওরা বসল—তারপর নদীর ধারে যেতে ওরা সব মায়ের কড়াখানা দেখলে । সত্য কি শুভক্ষণে কড়াখানা কেনা হয়েছিল । আজ কত বছর হয়ে গেল । কত লোক দেখে গেল ওখান । বনসিমতলায় ওরা বসল, আমি ও রমাপ্রসন্ন বনের মধ্যে তুততলায় বসলুম। সুপ্রভার পত্ৰখানা পড়লুম–ইস্টারে শিলং যেতে লিখেচে । সত্যি, কি ভালো মেয়ে ও ! ভূষণ মাঝি ঘাটে নাইচে। স্নানের সময় সাতার দিয়ে ওপারে গেলুম। তারপর এলুম বাড়ি, খুকুদের বাড়ির মধ্যে গিয়ে একবার দাড়াই। কতবার এমনি বেটুফুল-ফোট চৈত্র দিনে বনগ থেকে দুপুর রোদে বারাকপুর হেঁটে এসে ওকে ডেকেচি ওদের রান্নাঘরে গিয়ে—আজ কোথায় কে? সব শূন্ত । ইন্দু এসে গল্প করলে, আমাদের সঙ্গে নদীর ধার পর্য্যন্ত গেল। তারপর আমরা মোটরে গোপালনগরে এসে দুর্গ ময়রার দোকানে লুচি ভাজিয়ে খেলুম। আজ হাটবার, তবে ভোটের জন্তে অমৃত কাক, চালকীর বিভূতি সবাই যাচ্ছে। হরিহর সিং তার দোকানে ডাকলে । মনে পড়ল গত জ্যৈষ্ঠ মাসে ভাণ্ডারকোলা থেকে ফিরবার দিনে এর দোকানে বসেছিলাম। আর বললুম এই ৷ তখনি বনগী—সেখান থেকে বেনাপোল হরিদাস ঠাকুরের পাটবাড়ি। এই ছ’ঘরের পথেও এই চৈত্র মাসে এই তিনটের সময় কত গিয়েচি। পাটবাড়িতে কতক্ষণ বসে আবার বনগাঁ । মন্মথবাবুর বাড়ি সেই বিকেলে সেই রকম বসে মুগ্রভার গল্প করি। স্বপ্রভার প্রশংসা শতমুখে করেও আমি যেন ফুরোতে পারিনে। পথে বীরেশ্বরবাবুর সঙ্গে দেখা রাণাঘাট গেটের কাছে—আমি ডাকলুম, তিনি চাইলেন, কথা হল না। মুন্সেফ সঙ্গীক মোটরে যাচ্চে-চেয়ে হাসলে। স্বপ্রভার পত্ৰখানা কাল রাত্রে লিখেছিলুম—বনগা থেকে টিকিট কিনে সকালে পোস্ট করেচি ওবেলা । কাল ইউনিভার্সিটি থেকে কাগজ আনব। সেদিন ইউনিভার্সিটির মিটিং-এ অজয় ভট্টাচার্ব্যের সঙ্গে আলাপ হল। প্রমথ, বিজয়, পরিমল, গোপাল হালদার আমরা সব একসঙ্গে বেরিয়ে একটা