পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা ఫిలిపి —তুমি থাকো গাঁয়ের বাইরে । তা ছাড়া তুমি যে বংশের মেয়ে, তোমার নামে এ অঞ্চলের লোকে কিছ রটাতে সাহস করবে না । আমার বেলায় তা তো হবে না । আরও কিছুক্ষণ পরে রান্না শেষ হয়ে গেল। শরৎ রাজলক্ষীকে খেতে দিয়ে নিজে একটা বাটিতে চিড়ে ভাজা তেল-নন দিয়ে মেখে নিয়ে খেতে বসলো । রাজলক্ষী খেতে খেতে বললে, ও সাত-বাসি চি“ড়ে-ভাজা কেন খাচ্ছ শরৎদি ? আমার জন্যে তো সেই কট করলেই, রান্না করলে, এখন নিজের জন্যে না হয় খানকতক পরোটা কি রটি করে নিলেই পারতে ? শরৎ সলঙ্গ হেসে বললে, ময়দা আর ছিল না । প্রভাসদা আর অর্ণবাবকে তখন দখানা করে পরোটা করে দিলাম—যা ছিল সব ফুরিয়ে গেল । —আমায় বললে না কেন শরৎদি ? ওই তোমার বড় দোষ । আমায় বললে আমি বাড়ি থেকে নিয়ে আসতাম । —থাক গে, খাওয়ার জন্যে কি ? এখন কলকাতায় যাওয়ার কি করা যায় বল । আর শোন ওই অর্ণবাব, দেখলি তো ? পছন্দ হয় ? এবার তবে কথাটা পাড়ি প্রভাসদা’র কাছে ? -> রাজলক্ষী জবাব দিতে একটু ইতস্ততঃ করে সঙ্কোচের সঙ্গুে বললে, তা তোমার ইচ্ছে । কিন্ত ও আমাদের কখনো হয় ? বলে বামন হয়ে চাঁদে হাত— - —যদি ঘটিয়ে দিতে পারি ? রাজলক্ষী মনে মনে ভাবলে, শরৎদি'র বয়সই হয়েছে আমার চেয়ে বেশি, কিন্তু এদিকে সরলা। অনেক জিনিসই আমি যা ববি, ও তাও বোঝে না। চিরকাল গায়ের বাইরে জঙ্গলের মধ্যে বাস করে এলো কি না । সে মুখে বললে, দিতে পারো ভালই তো । বেশ কথা । —ঘটকালির বখশিশ দিবি কি ? —যা চাইবে শরৎদি । —দেখিস তখন যেন আবার ভুলে যাস নে— রাজলক্ষীর খাওয়ার প্রবত্তি চলে গিয়েছিল শরৎকে বাসি চিড়ে ভাজা খেতে দেখে। তার ওপর যখন আবার শরৎ গরম দধের বাটি এনে তার পাতের কাছে নামতে গেল, সে একেবারে পিড়ির ওপর থেকে উঠে পড়ল । দধটুকু থাকলে তবুও শরৎদি খেতে পাবে। —ও কি, উঠলি যে ? রাজলক্ষয়ী ভাল করেই চেনে শরৎকে । সে যদি এখন আসল কথা বলে, তবে শরৎ ও দধ ফেলে দেবে, তব নিজে খাকে না। সতরাং সে বললে, আর আমার খাওয়ার উপায় নেই শরৎদি, পেট খুব ভরে গিয়েছে। মরবো নাকি শেষে একরাশ খেয়ে ? —দ্ধ যে তোর জন্যে জাল দিয়ে নিয়ে এলাম ? কি হবে তবে ? রাজলক্ষী তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বললে, কি হবে তা কি জানি। না হয় তুমি খেয়ে ফেল ওটুকু। আমার আর খাওয়ার উপায় দেখছি নে। জানোই তো আমার শরীর খারাপ, বেশী খেতে পারি নে । অগত্যা শরৎকেই দুধ টুকু খেয়ে ফেলতে হল। পরদিন সকালেই প্রভাস ও অরণ আবার এসে হাজির । প্রভাস বললে, কি ঠিক করলে দিদি । —ও এখন হয়ে উঠবে না প্রভাসদা। আপনারা যাবেন না, বসন । চা আর খাবার করে দি, বসে গল্প করন।