পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՆo বিভূতি-রচনাবলী বা রে, এখানে সব যে, আমি খুজে বেড়াচ্ছি – প্রভাসের বৌদিদি উৎফুল্ল হয়ে উঠে বললে, বেশ সময়ে এসে পড়েছ কমলা -আমি ওকে 'বোঝাচ্ছি ভাই যে আজ রাতটা এখানে থেকে যেতে । উনি আজ আফিস থেকে আসবেন না, জানোই তো—দজনে বেশ একসঙ্গে গল্পগুজবে – কি বলো ? প্রভাস এবং তার দলবল একটু আগে বাইরে কমলার সঙ্গে কি কথা বলেছে। সেই জন্যই তার এখানে আসা, যতদর মনে হয় । সে বললে, আমিও তাই বলি ভাই, বেশ সবাই মিলেমিশে -একটা রাত আপনাকে নিয়ে আমোদ করা গেল প্রভাসের বৌদিদি বললে, আর বন্ড ভাল লেগেছে তোমাকে তাই বলছি । কি বলো কমলা ? —তা আর বলতে ! আমি তো ভাবছি একটা কিছু সম্মবন্ধ পাতাবো— এই মেয়েটিকে সত্যিই শরতের খুব ভাল লেগেছিল—বয়সে এ তার সঙ্গিনী রাজলক্ষীর চেয়ে কিছল বড় হবে, দেখতে শুনতে রূপসী মেয়ে বটে। সকলের ওপরে ওর গান গাইবার গলা-অনেক জায়গায় গান শ,নেছে শরৎ “-কিন্তু এমন গলার সবর – শরৎ আগ্রহের সঙ্গে বলে উঠল, বেশ সবন্ধ পাতাও না ভাই—আমি ভারী সখী হবো— —কি সবন্ধ পাতাবেন বলনে ? —আপনি বলনে— প্রভাসের বৌদিদি বললে, গঙ্গাজল ? পছন্দ হয় ? কমলা উৎসাহের সরে ঘাড় নেড়ে বললে, বেশ পছন্দ হয়। আপনারও হয়েছে তো ?... তবে তাই—কিন্তু আজ রাত্রে -- - শরৎ আপন মনেই বলে গেল তোমাকে ভাই আমাদের দেশে নিয়ে যাবো, যাবে তো ? তোমার বয়সী একটি মেয়ে আছে রাজলক্ষী, বেশ মেয়ে । আলাপ করিয়ে দেবো। আমাদের বাড়ি গিয়ে থাকবে । তবে হয়তো অত অজ-পাড়াগাঁ তোমার ভাল লাগবে না— —কেন লাগবে না, খাব লাগবে – আপনাদের বাড়ি থাকবে – —জানো না তাই বলছো। আমাদের বাড়ি তো গাঁয়ের মধ্যে নয়-গায়ের বাইরে জঙ্গলের মধ্যে - কমলা আগ্রহের সরে বললে, কেন, জঙ্গলের মধ্যে কেন ? —আগে বড় বাড়ি ছিল, এখন ভেঙে-চুরে জঙ্গল হয়ে পড়েছে, যেমনটি হয়— – বাঘ আছে সেখানে ? শরং হেসে বললে, সব আছে, বাঘ আছে, সাপ আছে, ভুতও আছে— কমলা ও প্রভাসের বৌদিদি একসঙ্গে বলে উঠল—ভূত ! আপনি দেখেছেন ? —না, কখনো দেখি নি, ওসব মিথ্যে কথা। কিংবা চলো তোমরা একদিন, ভূত দেখতে পাবে । - প্রভাসের বৌদিদি বললে, আচ্ছা, সে জঙ্গলে না থেকে কলকাতায় এসে থাকো না কেন ভাই। এখানে কত আমোদ-আহমাদ–তুমি এখানে থাকলে কত মজা করবো আমরা— তোমাকে নিয়ে মাসে মাসে আমরা থিয়েটারে যাবো, বায়কোপে যাবো—খাবো দাবো—কত আমোদ ফুক্তি করা যাবে। গঙ্গার ইন্টিমারে বেড়াতে যাবো, যাও নি কখনো বোধ হয় ? চমৎকার বাগান আছে, ওই শিবপুরের দিকে, সেখানে কত গাছপালা – শরতের হাসি পেলো। গাছপালা দেখতে ইস্টিমারে চেপে গঙ্গা বেয়ে কোথায় যেন যেতে হবে কতদর কলকাতায় এসে—তবে সে গাছপালা দেখতে পাবে । হায় রে গড়শিব