পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাজিত రీరి —অনার ব্রাইট । শীতের অনেক দেরি, কিন্তু এরই মধ্যে লীলাদের গাড়িবারান্দার পাশে জাফরিতে ওঠানো মাশালনীলের লতায় ফল দেখা দিয়াছে, বারান্দার সিড়ির দু’পাশের টবে বড় বড় পল নিরোন ও ব্ল্যাক প্রিন্স ফটিয়াছে। বষাশেষে চাইনিজ ফ্যান পামের পাতাগুলো ঘনসবুজ। পদমপুকুর রোডে পা দিয়া অপর চোখ জলে ভরিয়া আসিল । লীলা, ছেলেমানষে লীলা—সে কি জানে সংসারের রাঢ়তা ও নিষ্ঠুর সম্বষের কাহিনী ? আজ তাহার মনে হইল, লীলার পায়ে একটা কাঁটা ফটিলে সেটা তুলিয়া দিবার জন্য সে নিজের সুখ শান্তি সম্পণে উপেক্ষা ও অগ্রাহ্য করিতে পারে। বিবাহের পর লীলার সঙ্গে এই প্রথম দেখা, কিন্ত দু-একবার বলি বলি করিয়াও অপর বিবাহের কথা বলিতে পারিল না, অথচ.সে নিজে ভালই বোঝে যে, না বলিতে পারিবার কোন সঙ্গত কারণ নাই । চতুর্দশ পরিচ্ছেদ এক বৎসর চলিয়া গিয়াছে। পুনরায় প্রজার বিলম্ব অতি সামান্যই । শনিবার । অনেক অফিস আজ বন্ধ হইবে, অনেকগুলি সম্মুখের মঙ্গলবারে বন্ধ । দোকানে দোকানে খুব ভীড়—ঘন্টাখানেক পথে হাঁটলে হ্যান্ডবিল হাত পাতিয়া লইতে লইতে ঝুড়িখানেক হইয়া উঠে। একটা নতুন স্বদেশী দেশলাইয়ের কারখানা পথে পথে জাঁকাল বিজ্ঞাপন মারিয়াছে । আমড়াতলা গলির বিখ্যাত ধনী ব্যবসাদার নকুলেশ্বর শীলের প্রাসাদোপম সবাহৎ অট্টালিকার নিম্নতলেই ইহাদের অফিস। অনেকগুলি ঘর ও দুটা বড় হল কমচারিতে ভত্তি । দিনমানেও ঘরগুলির মধ্যে ভালো আলো যায় না বলিয়া বেলা চারটা না বাজিতেই ইলেকট্রিক আলো জনলিতেছে । 始 ছোকরা টাইপিস্ট নপেন সন্তপণে পদ"া ঠেলিয়া ম্যানেজারের ঘরে ঢুকিল । ম্যানেজার নকুলেশ্বর শীলের বড় জামাই দেবেন্দুবাব । ভারী কড়া মেজাজের মানুষ । বয়স পঞ্চাশ ছাড়াইয়াছে, দোহারা ধরণের চেহারা। বেশ ফর্সা, মাথায় টাক । এক কলমের খোঁচায় লোকের চাকরি খাইতে এমন পারদশী লোক খুব অল্পই দেখা যায়। দেবেন্দুবাবু বলিলেন —কি হে নপেন ? নপেন ভুমিকাস্বরুপ দইখানা টাইপ-ছাপা কি কাগজ মঞ্জর করাইবার ছলে তাঁহার টেবিলের উপর রাখিল । *3 সহি শেষ হইলে নপেন একটু উশখশ করিয়া কপালের ঘাম মছিয়া আরক্তমখে বলিল— আমি—এই—আজ বাড়ি যাব—একটু সকালে, চারটেতে গাড়ি কি না ? সাড়ে তিনটেতে না গেলে— —তুমি এই সেদিন তো বাড়ি গেলে মঙ্গলবারে । রোজ রোজ সকালে ছেড়ে দিতে গেলে অফিস চলে কেমন ক’রে ? এখনও তো একখানা চিঠি টাইপ কর নি দেখছি— এ অফিসে শনিবারে সকালে ছয়টির নিয়ম নাই ৷ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার প্বে কোনদিন অফিসের ছুটি নাই । কি শনিবার কি অন্যদিন । কোনও পাল-পাবণে ছয়টি নাই, কেবল পজার সময় এক সপ্তাহ, শ্যামাপজোয় একদিন ও সরস্বতী পজোয় একদিন । অবশ্য রবিবারগুলি বাদ । ইহাদের বন্দোবস্ত এইরুপ-চাকরি করিতে হয় কর, নতুবা যাও চলিয়া । এ ভয়ানক বেকার সমস্যার দিনে কম"চারিগণ নবমীর পঠিার মত কাঁপতে কাঁপিতে চাণক্য مسن f۹۰۰