পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যালাবদল පGළු কোন কালে। এদের জীবনীশক্তি এত অযুরন্ত যে, অহরহ মরণের সঙ্গে যঝে এবং পদে পদে হেরে গিয়েও দমে যায় না এরা, বা ভয় পায় না, প্রতিকার করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে না। সহজভাবেই সব মেনে নেয়, সব ব্যবস্হা । খারাপ বিলের পাটপচানো জল খেয়ে কলেরায় গ্রাম উৎসন্ন হয়ে থাকে, তব এরা টিউবওয়েলের জন্যে একখানা দরখাস্ত কখনও দেবে না বা তদ্ধির করবে না। কে অত ছটোছটি করে, কে-ই বা কট করে ? শুধু একখানা দরখাস্ত করা মাত্র, অনেক সময় দরকার বুঝলে . জেলা বোড থেকে বিনা খরচায় টিউবওয়েল বসিয়ে দেয়—কিস্ত ততটুকু হাঙ্গামা করতেও এরা রাজী নয় । বাসায় একদিন বিকেলে চা খাওয়ার সময়ে লক্ষ্য করলাম, আমার ছোট মেয়েটি সেই কলাই করা পেয়ালাটা ক'রে চা খাচ্ছে । যদিও ওসব মানি নে, তবুও আমার কি-জানি-কি মনের ভাব হ’ল—চা খাওয়া-টাওয়া শেষ হয়ে গেল পেয়ালাটা চুপি চুপি বাইরে নিয়ে গিয়ে টান মেরে ছুড়ে ফেলে দিলাম পাচিলের ওধায়ের জঙ্গলের মধ্যে । কাকার বড় মেয়েটির বিয়ে হয়ে গিয়েছিল, ছোট মেয়েটির বয়স দশ বছর, খুব বৃদ্ধিমতী। শহরের মেয়ে-স্কুলে লেখাপড়া শেখাব বলে ওকে বাসায় এনে রেখেছিলাম, স্কুলেও ভত্তি' করে দিয়েছিলাম । sEs মাস পাঁচ-ছয় কাটল । বৈশাখ মাস । এই সময়েই আমার টিউবওয়েলের কাজের ধমে । আট দশ দিন একাদিক্ৰমে বাইরে কাটিয়ে বাসায় ফিরি কিস্ত তখনই আবার অন্য একটা কাজে বেরিয়ে যেতে হয় । এতে পয়সা রোজগার হয় বটে, কিন্ত অবস্তি পাওয়া যায় না । ‘সীর হাতের সেবা পাই নে, ছেলেমেয়েদের সঙ্গ পাই নে, শধ্যে টো টো ক'রে দরদ রান্তর চাষাগী ঘরে ঘরে বেড়ানো—শুধই এস্টিমেট কষা, মিস্ত্রী খাটানো । মানুষ চায় দু-দণ্ড আরামে থাকতে, আপনার লোকেদের কাছে বসে তুচ্ছ বিষয়ে গল্প করতে, নিজের সাজানো ঘরটিতে খানিকক্ষণ করে কাটাতে, হয়তো একটু বসে ভাবতে, হয়তো ছেলেমেয়েদের সঙ্গে একটু ছেলেমানষেী করতে-শািণক টাকা রোজগারে এসব অভাব তো পণ হয় না । হঠাৎ চিঠি পেয়ে বাসায় ফিরলাম, কাকার ছোট মেয়েটির খুব অসুখ । আমি পে"tছলাম দর্পরে, একটু পরে রোগীর ঘরে ঢুকে আমি থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম । আমার পিসিমা সেই কলাই-করা পেয়ালাটাতে রোগীকে সাব না বালি খাওয়াচ্ছেন। আমি আমার মেয়েকে আড়ালে ডকে জিজ্ঞাসা করলাম—ও পেয়ালাটা কোথা থেকে এল রে ? খাকী বললে—ওটা কুকুরে না কিসে বনের মধ্যে নিয়ে ফেলেছিল বাবা, মনদি দেখতে পেয়ে নিয়ে এসেছিল । সে তো অনেক দিনের কথা, পাচিলের বাইরে ওই যে বন, ওইখানে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। আমি বিস্মিত সরে জিজ্ঞেস করলাম—মন নিয়ে এসেছিল ? জানিস ঠিক তুই ? খাকী অবাক হয়ে আমার মাখের দিকে চেয়ে বললে—হ’্যা বাবা, আমি খুব জানি। তুমি না হয় মাকে জিজ্ঞেস করো ; আমাদের সেই ষে ছোকরা চকেরটাকে কুকুরে কামড়েছিল না, ঐ দিন সকালে মনদি পেয়ালাটা কুড়িয়ে আনে। ওই পেয়ালাতে তাকে কিসের শেকড়ের পাঁচন খাওয়ানো হ’ল আমার মনে নেই ! আমি চমকে উঠলাম, বললমে কাকে রে ; রামলগনকে ? —হ’্যা বাবা, সেই যে তারপর এখান থেকে চলে গেল দেশে, সেই ছেলেটা। আমার সারা গা ঝিমঝিম করছিল—রামলগনকে কুকুরে কামড়ানোর পর দেশে চলে