অপরাজিত ১৩৭ পাইপওয়ালার গোমস্ত তাহদের বিল বুঝিয়া পাইয়া চলিয়া গেল—তিনদিন ধরিয়া রৌদ্রে ছুটাছুটি ও পরিশ্রম সার হইল, একটি পয়সাও তাহাকে দিল না কোন পক্ষই। থোট্ট গাড়োয়ান পথ বন্ধ করিয়া দাড়াইল বলিল-হামারা ভাড়া কৌন দেগা ? একজন বৃদ্ধ মুসলমান দালানের এক পাশে দাড়াইয়া ব্যাপার দেখিতেছিল, অপু আফিস হইতে বাহিরে আসিলেই সে বলিল, বাৰু আপনি কত দিন এ কাজে নেমেছেন—কাজ তো কিছুই জানেন না দেখছি— অপুকে সে-কথা স্বীকার করিতে হইল। লোকটি বলিল—আপনি লেখাপড়া জানেন, ও-সব খুচরো কাজ ক'রে আপনার পোষাবে ন! ! আপনি আমার সঙ্গে কাজে নামবেন ?— বড় মেশিনারির দালালি, ইঞ্জিন, বয়লার এই সব । এক-একবারে পাঁচ-শো সাত-শো টাকা রোজগার হবে—বাবু ইংরেজি জানি নে তাই, তা যদি জানতাম, এ বাজারে এতদিন গুছিয়ে. নামবেন আমার সঙ্গে ? অপু হাতে স্বৰ্গ পাইরা গেল। গাড়োয়ানকে ভাড়াটা যে দণ্ড দিতে হইল, আনন্দের আতিশয্যে সেটাও গ্রাহের মধ্যে আনিল না। মুসলমানটির সঙ্গে তাহার অনেকক্ষণ কথাবার্তা হইল—অপু নিজের বাসার ঠিকানা দিয়া দিল। স্থির হইল, কাল সকাল দশটার সময় এইখানে লোকটি তাহার অপেক্ষা করিবে । অপু রাত্রে শুইয়া মনে মনে ভাবিল—এতদিন পয়ে একটা সুবিধে জুটেছে,--এইবার হয়ত পয়সার মুখ দেখবো। কিন্তু মাসখানেক কিছুই হইল না.একদিন দালালটি তাঁহাকে বলিল—দুটোর পর আর বাজারে থাকেন না, এতে কি হয় কখনও বাৰু? যান কোথায় ? অপু বলিল, ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরীতে পড়তে যাই—দুটো থেকে সাতটা পর্যন্ত থাকি । একদিন যেও, দেখাবো কত বড় লাইব্রেরী। লাইব্রেরীতে ইতিহাস খুব আগ্রহের সঙ্গে পড়ে, কোন এক দরিদ্র ঘরের ছোট ছেলের কাহিনী পড়িতে বড় ইচ্ছ। যার, সংসারে দুঃখকষ্টের সঙ্গে যুদ্ধ—তাছাদের জীবনের অতি ঘনিষ্ঠ ধরণের সংবাদ জানিতে মন যার । মাচুষের সত্যকার ইতিহাস কোথায় লেখা আছে ? জগতের বড় ঐতিহাসিকদের অনেকেই যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রাজনৈতিক বিপ্লবের ঝাঝে, সম্রাট, সম্রাঙ্গী, মন্ত্রীদের সোনালী পোশাকের জাকজমকে, দরিদ্র গৃহস্থের কথা তুলিয়া গিয়াছেন। পথের ধারের আমগাছে তাহাদের পুটুলবাধা ছাতু কবে ফুরাইরা গেল, সন্ধ্যায় ঘোড়ার হাট হইতে ঘোড়া কিনিয়া DDDD BD DBBD DBDD BB BDD BDD BB BDD DBBBD BB তুলিয়াছিল—ছ হাজার বছরের ইতিহাসে সে-সব কথা লেখা নাই—থাকিলেও বড় কম— রাজা যযাতি কি সম্রাট অশোকের শুধু রাজনৈতিক জীবনের গল্প সবাই শৈশব হইতে মুখস্থ করে—কিন্তু ভারতবর্ষের, গ্রীসের, রোমের, ধব-গম ক্ষেতের ধারে, ওলিভ, বঙ্কগ্ৰাক্ষা, মার্টল ঝোপের ছায়ায় ছায়ায় যে প্রতিদিনের জীবন, হাজার হাজার বছর ধরিয়া প্রতি সকাল সন্ধ্যায়