পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণাস্কুর २२¢ ঢাকুরে লেককে লজ্জায় মুখ লুকাতে হয়। এর গভীর মহিমার কাছে ঢাকুরিয়া লেক বাল্মীকির কাছে ভারতচন্দ্র রায়। এর কি তুলনা দেব ? মান জোৎস্না উঠল। যোধপুরী ছাত্রটি লোক ভাল, কিন্তু তার দোষ সে অনবরত বকচে। প্রমোদবাবু তার নাম রেখেচেন ‘মূলে' —সে চুপ করে থাকলে আমরা আরও অনেক বেশী উপভোগ করতে পারতুম। আসবার পথটিও বড় চমৎকার—পথ ক্রমে নেমে যাচ্চে—দুধারে সেই রকম hmmensity। মনে হল আজ পূজার মহাষ্টমী—দুর বাংলাদেশের পল্লীতে পল্লীতে এখন এই সন্ধায় মহাষ্টমীর আরতি সম্পন্ন হয়ে গেছে, প্রাচীন পূজার দালানে নতুন জাম-কাপড় পরে ছেলেমেয়ের মুড়ি-মুড়কি, নারকোলের নাড়, কোচডে ভরে নিয়ে খেতে খেতে প্রতিম! দেখচে । বারাকপুরের কথা, তার ছায়াঘের বাশবনের কথাও এ সন্ধ্যায় আজ আবার মনে এল । সজনে গাছটার কথাও—সেই সজনে গাছট। মহাষ্টমীতে আজ ক্র্যাডক্‌-টাউনে প্রবাসী বাঙালীদের দুর্গোৎসব দেখতে গিয়েছিলাম। নাগপুরে বাঙালী এত বেশী তা ভাবি নি ; ওরা প্রসাদ খাবার অনুরোধ করলে—কিন্তু নীরদবাবুকে রুগ্ন অবস্থায় বাসায় রেথে আমরা কি করে বেশীক্ষণ থাকি ? মারাঠী মেয়ের রঙীন শাড়ি পরে সাইকেলে চেপে ঠাকুর দেথতে যাচ্চে। আমরা মহারাজবাগের মধ্যের রাস্ত দিয়ে এগ্রিকালচারাল কলেজের গাড়িবারীন্দার নীচে দিয়ে ভিক্টোরিয়া রোডে এসে পীছুলুম। রাত সাড়ে সাতটা, জোৎস্ন মেঘে ঢেকে ফেলেচে । সেদিন বনগাঁয়ে ছকু পাড়ইর নৌকাতে সাতভেয়েতলা বেড়াতে গিয়েছিলাম—এবার বর্ষায় ইছামতী কুলে কুলে ভরে গিয়েসে—দুধারের মাঠ ছাপিয়ে জল উঠেচে–তারই ধারের বেতবন, অন্তান্ত আগাছার জঙ্গল বড় ভাল লেগেছিল। অত সবুজ, কালো রংয়ের ঘন সবুজ,– বাংলা ছাড়া আর কোথাও দেখা যাবে না, বনের অন্ত বৈচিত্র্য ও রূপ কোথাও নেই—নীল আকাশের তলায় মাঠ, নদী, বনঝোপ বেশ সুন্দর লেগেছিল সেদিন । কিন্তু আজি মনে হল সে যত মুনীর হোক, তার বিরাটভ নেই—তা pretty বটে, majestic of চারিধারে জঙ্গলাবৃত—গাছপালার মধ্যে হ্রদটা। হ্রদের বাংলোতে বসে লিখচি। প্রমোদবাৰু বলচেন, স্বর্য ঢলে পড়েচে শীগগির লেখা শেষ করুন। এখান থেকে আমরা এখন রামটেক্‌ যাব। কি গভীর জঙ্গলটাতে এইমাত্র বেড়িয়ে এলাম—বুনো শিউলি, কেঁদ, আবলুস, সাইবাবলা সব গাছের বন। সামনে যতদূর চোখ যায় নীল পর্বতমালা বেষ্টিত বিরাট হ্রদটী । এমন দৃপ্ত জীবনে খুব কমই দেখেছি। পাহাড়ে যখন মোটরটা উঠল—তখনকার দৃপ্ত বর্ণনা করবার নয়। সময় নেই হাতে, তাই তাড়াতাড়ি যা-তা লিখচি। স্বর্য ঢলে পড়েচে—এখনও এখান থেকে পাচ মাইল দূরবর্তী রামটেক দেখতে যাব। প্রমোদবাবু তাগাদ দিচ্চেন। বনশিউলি গাছের সঙ্গে বনতুলসী গাছও আছে—কিন্তু তা পাহাড়ের বাইরের ঢালুতে। একটা সুন্দর গন্ধ বেরুচ্চে। মোটরওয়ালা কোথায় গিয়েচে–হর্ন দিচ্চি—এখনও খোজ পাই নি। পাহাড়ের গায়ে ছায়া পড়ে এসেচে। দুরের পাহাড় নীল হতে নীলতর হচ্চে। এখানে হ্রদের वि. ब्र २-8d W