পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণাঞ্চুর २8> কেটেছে—আকাশের নীচে একটু একটু আলো দেখা যাচ্চে–বোধহয় ওবেলা আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে। মনটা তপ্ত নির্মল আকাশ ও প্রচুর স্বর্যালোকের জন্থে ইপিচ্চে—কাকাম্বের শিউলি গাছটার দিকে চেয়ে দেখচি গাছপালার স্বাভাবিক প্রভাতী রং ফিরে এসেচে–সে ঘষা কার্চের মত রং নেই আকাশের। কিন্তু একটু পরেই ঘন মেঘে সব ঢেকে দিলে। আমি আবিষ্কার করেচি আমাদের দেশের প্রথম হেমন্তের সে অপূর্ব মুগন্ধটা প্রস্ফুটন্ত মরচে’লভার ফুলের গন্ধ । হঠাৎ কাল বিকেলে আমি এটা আবিষ্কার করেচি। কুঠার মাঠে আজ স্নানের পূর্বে বেড়াতে গিয়ে বনে বনে খানিকটা বেড়ালাম, লক্ষ্য করে দেখলাম এই সময়ে কত কি বনের লতাপাতায় ফুল ফোটে। মরচে-লতা তো পুম্পিত হয়েছেই, তা ছাড়া মাখম-সিমের গোলাপী ফুলের দল ঘন সবুজ পাতার আড়ালে দেখা যাচ্চে, কেরোবীকার লতায় ক্ষুদে ক্ষুদে ফুল ফুটেচে, ফুল বলে মনে হয় না, মনে হয় যেন হলদে পুপরেণু,—কি ভুরতুরে মিষ্টি গন্ধ, ডালের গায়ে পর্যন্ত ফুল ফুটেছে। ছাতিম ফুলের এই সময়, কুঠার মাঠের জঙ্গলে একটা নবীন সপ্তপর্ণ তরুর দেখা মিলল, কিন্তু ফুল হয় নি তাতে । মেটে আলু তুলবার বড় বড় গত বনের মধ্যে, এক জায়গায় একটা বড় কেয়ে বিীকার ঝোপকে কেটে ফেলেচে দেখে আমার রাগ ও দুঃখ দুই-ই হল, নিশ্চয় যারা মেটে আলু তুলতে এসেছিল, তাদেরই এই কাজ। সজীব পুষ্পিত গাছ—কারণ এই সময় কেয়ে বিীকার ফুল হয়—কেটে ফেলা যে কতদূর হৃদয়হীন বর্বরতা, তা আমাদের দেশের লোকের বুঝতে অনেকদিন যাবে। সেবার অমনি যুগল কাকাদের বাড়ির সামনের কদমগাছটা কালে বিক্ৰী করে ফেললে তিন টাকায়, জালানি কাঠের জন্তে । এমন কি কেউ কোথাও শুনেচে ? কদমগাছ, যা গ্রামের একটা সম্পদ, যে পুষ্পিত নীপ সকল বৈষ্ণব ফবিকুলের আশ্রয় ও উপজীব্য—সামান্ত তিনটে টাকার জন্তে সে গাছ কেউ বেচে ? শুধু আমাদের দেশে এ ধরনের ঘটনা সম্ভব হয়, স্বনারকে দেখবার চোখ থাকলে, ভালবাসার প্রাণ থাকলে এ সব কি আর হত । কাল বিকেলে অল্পক্ষণের জন্ত সোনালী রাঙা রোদ উঠল—বেলেডাঙ্গার পথে যেখানে একটা বাবলা গাছের মাথায় একটা বুনো চালকুমড়ো হয়ে আছে, ঐখানটাতে বসলুম—কত দিনের মেঘমেদুর আকাশের পরে আজ রোদ উঠেচে, এ যেন পরম প্রাথিত ধন । এক জায়গায় সোদালি ফুল ফুটে থাকতে দেখলাম মাঠের মধ্যে। কার্তিক মাসে লোদালি ফুল, কল্পনা করতেই পারা যায় না। কেলেকোড়ার ফুলও এসময়ে হয়। কাল মেয়ের চৌদ্ধ শাক তুললে, চোদ পিদিম দিলে—খুকুদের বোধনতলায় বড় একটা প্রদীপ দিয়েছিল, বিলবিলের ধারে, উঠোনের শিউলিতলায় । বারাকপুরে চোদ্দ পিদিম দেওয়া দেখি নি কতকাল । আজ বিকেলে খুকুদের কুঠার মাঠে বেড়াতে নিয়ে গেলাম। পুরনো কুঠার হাউজঘরে ঘোর জঙ্গল হয়ে গিয়েচে—কত কি বনের লতা হয়ে আছে—খুকুর তা দেখে আনন্দ উৎসাহ দেখে কে একটা লতার মধ্যে কি ভাবে চুকে সে খানিকটা দুললে, মাঠে গিয়ে ছুটোছুটি করলে— وه دس-ج fR. q