পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శిసిసి বিভূতি-রচনাবলী আমি একটা ব্যাপার জানি, এই রকম একটা স্টেশনের ওয়েটিক্লেমে রাত দশটার পরে লোক থাকতে পারভো না। শুধু তাই নয়, একবার অনেক রাত্রের ট্রেনে এক ভদ্রলোক নেমে রাত্রের মত স্টেশনের ওয়েটিংরমেই ছিলেন—সকালেও তিনি ওঠেন না দেখে সকলে তুলতে গিয়ে দেখলে তিনি অচৈতন্ত অবস্থায় মুগ্ধ উপুড় করে পডে' আছেন। তারপর অনেক যত্নে র্তার জ্ঞান হয় । তিনি সকলের কাছে বলেন, শেষরাত্রির দিকে এক সাহেব এসে তাকে ওঠায়। পরে হঠাৎ সে পকেট থেকে একটা ক্ষুর বার করে নিজের গলায় বসিয়ে এমন জোরে টানতে থাকে যে কাচা চামডা কাটার অস্বস্তিকর খ্যাচ খ্যাচ আওয়াজে তার সাবা শরীর শিউরে ওঠে। তিনি চীৎকার করে লোক ডাকতে যেতেই দেখেন কেউ কোথাও নেই, সাহেবের ৯িছ৭ নেই ঘরে -তারপর কি হোল তিনি আর জানেন না। সেই স্টেশনে ওয়েটিংক্রমের বাথরুমটার মধ্যে এক ছোকরা সাহেব এঞ্জিনীয়ব কি জন্তে একবার ঠিক ওই ভাবে গলায় ক্ষুর বসিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। তারপর থেকেই এই ব্যাপাব . আমরা সকলে আমাদের বাথ-কমটার দিকে চেয়ে দেখলাম। লুপ-লাইনের নির্জন পাহাড়ে জঙ্গলের ধারে, লাইনের ও-পারে কেবল স্টেশন-মাস্টারের কোয়াটারটা এবং লেভেল-ক্রসিং-এর ফটকে দারোরানের গুমটি । ওয়েটিংক্রমের বাইরে স্টেশনের হাতার পরেই একটা ছোট্ট পান-সিগারেটের ও চা-এর দোকান। দিনমানে এমন কি , সন্ধ্যার একটু পর পর্যন্তও দেখেছিলাম, তার পর থেকেই আর দোকানীর পাত্তা নেই—দোকান বন্ধ করে চলে গিয়েছে। গল্প ভাল করে জমতে না জমতে হঠাৎ দোরটা খুলে গেল। একটা কুলীর হতে বাসার খালার ওপর গোটা আষ্ট্রেক পেয়াল ভর্তি চা নিযে ঢুকলো হাসিমুথে রমেন। ঢুকেই বললে -cnstal 7 Where there is a will, there is a way <tafeti: : 5it: ব্যবস্থা করবোই ? স্টেশন-মাস্টারের সঙ্গে আলাপ হয়ে গেল, র্তার বাড়িৎ আমাদের জেলায়। তিনি বললেন—বিলক্ষণ, আপনারা ভদ্রলোকের ছেলে, বাঙালী, চা থাবেন এ তে সৌভাগ্য । ছাড়লেন না কিছুতেই, নিজের বাসা থেকে তৈরী করে পাঠিয়ে দিলেন . রমেনের কথা শেষ হতে না হতে দোর ঠেলে এক ভদ্রলোক ঢুকলেন। রমেন প্রায় খেলার পুতুলের মত লাফিয়ে উঠে বললে—এই যে মিত্তির-মশায়,—আসুন আমুন। পরে আমাদের দিকে চেয়ে বললে—ইনিই এখানকার স্টেশন-মাস্টার হরিদাসবাৰু। আমুন বসুন । ততক্ষণে হরিদাসবাবু টেবিলের সামনের হাতলশুন্ত বেতের কেদারাটাতে আমাদের সকলের উদেশে অভিবাদনের জন্তে হাত উচু করে গরুডের মত বসে আছেন। মিত্তিরমশায়ের বয়স পরতাল্লিশের কম নয়, দোহারা গডন, কানের পাশের চুলগুলোতে বেশ পাক ধরেছে—গোপ-দাড়ি কামানো । পশ্চিমের আট-জলে বেশ স্বাস্থ্যবান শরীর। আমি জিজ্ঞাসা করলাম—আপনি এখানে কত দিন আছেন মিত্তির-মশায় ? —অজ্ঞে, এই আসছে ফেব্রুয়ারীতে দেড় বছর হবে। বড় কষ্ট মশাই, মাছ তো একেবারে