পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী و حاليا অংশের রং যেন সাদ আগুনের মত জলছে “বিস্মিত হয়ে জোর করে চোখ চাইতেই সে মূর্তি কোথায় মিলিয়ে গেল !.বিছানায় তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম ঘড়িতে দেখলাম রাত দুটো. ভাল করে চোখ মুছলাম, ঘরে কেউ কোথাও নেই। ভাবলাম আরে গেল যা, রাত দুপুরের To aco cofocomotiots co Abou Ben Adhem (may his tribe increase) খানিকক্ষণ বিছানায় বসে থাকবার পর ঠিক করে নিলাম, ওটা ঘুমের ঘোরে কি রকম চোখের ধাধা দেখে থাকবে। তারপর আবার শুয়ে পড়লাম, একটু পরে বেশ ঘুম এল । কতক্ষণ পরে জানি না, আবার কি জানি কেন হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল যুম ভাঙবার সঙ্গে সঙ্গে আবার সে সুগন্ধটা পেলাম...আবার সেই নেশা! এবার নেশাটা ধেন আমায় পূর্বের চেয়েও বেশী অভিভূত করে ফেললে...তার পরই দেখি, সেই মুণ্ডিত-মস্তক পীতবসন জ্যোতির্মর বৌদ্ধভিক্ষু আমার খাটের অত্যন্ত কাছে দাড়িয়ে আমার দিকে চেয়ে আছেন - তারপর আরও কতকগুলো অদ্ভুত ব্যাপার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটলো। হঠাৎ আমার ঘরে দৃশুটা আমার চোখের সামনে থেকে মিলিয়ে গেল.দেখলাম, এক বিস্তীর্ণ স্থান, কত বাড়ি, শ্বেত-পাথরে বাধানে কত চত্বর, কত গম্বুজ, দেউল.অনেক মুণ্ডিতমস্তক বৌদ্ধ-ভিক্ষুর মত-পরিচ্ছদ-পরা লোকের এ-দিক ও-দিক যাতায়াত করছেন, অসংখ্য ছাত্র ঘরে ঘরে পাঠনিরত একস্থানে অশোক-বৃক্ষের ছায়ায় শ্বেত-পাথরের বেদীতে একদল তরুণ যুবক পরিবৃত হয়ে বসে আমার পরিচিত সেই বৌদ্ধ-ভিক্ষু ! দেখে মনে হোল, তিনি অধ্যাপনায় নিরত এবং যুবক-মণ্ডলী তার ছাত্র। অশোক-কুঞ্জের ঘন-পল্লবের প্রাস্তস্থিত রক্তপুপগুচ্ছের ঝরা পাপড়ি গুরু ও শিক্ষুবর্গের মাথার ওপর বধিত হতে লাগলো। দেখতে দেখতে সে দৃষ্ঠ মিলিয়ে গেল.আমার তন্দ্রালস কানের মধ্যে নানা বাজনার একটা সম্মিলিত সুর বেজে উঠলো এক বিরাট উৎসবসভা | উৎসব-বেশে সজ্জিত নরনারীতে সভা ভরে ফেলেছে. সব যেন অজন্তার গুহার চিত্রিত নরনারীরা জীবন্ত হয়ে উঠে বেড়াচ্ছে । কোন প্রাচীন যুগের হাবভাব, পোশাক পরিচ্ছদ-সভার চারিধারে বর্শাহাতে দীর্ঘদেহ সৈনিকরা দাড়িয়ে, তেজস্ব যুদ্ধের ঘোড়াগুলো মূল্যবান সাজ পরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে পা ঠুকছে .. সভার মাঝখানে রক্তাম্বর-পরণে চম্পক-গৌরী কে এক মেয়ে.মেয়েটির সামনে দাড়িয়ে উজ্জল ইস্পাতের বর্ম আঁট এক যুবক...তার কোমরে ঝকৃঝকে ইস্পাতের খাপে বাকী তলোয়ার দুলছে গলায় ফুলের মালা.মুথে বালকের মত সরল মুকুমার হাসির রেখা । মেরেটির নিটােল স্বন্দর হাতটি ধরে যুবকের দৃঢ় পেশীবহুল হন্তে যিনি স্থাপন করলেন—ভাল করে চেয়ে দেখলাম, তিনি আমার রাতের বিশ্রামের ব্যাঘাতকারী সেই বৌদ্ধ-ভিক্ষু। বায়স্কোপের ছবির মত বিবাহ-সভ মিলিয়ে গেল। হঠাৎ আমার হাত-পা যেন খুব ঠাও। হয়ে উঠলো। শীতে দাতে দাঁত লাগতে লাগলেী.পায়ের আঙুল যেন আড়ষ্ট হয়ে উঠলো। চোখের সামনে এক বিস্তীর্ণ সাদা বরফের রাজ্য.ওপর থেকে বরফ পড়ছে...তুষার-বাম্পে চারিধার অস্পষ্ট “সামনে পেছনে সুউচ্চ পর্বভের চুড়া-সামনে এক সঙ্কীর্ণ পথ একে বেঁকে উচ্চ হতে উচ্চতর পার্বত্য প্রদেশে উঠে গিয়েছে। এক দীর্ঘদেহ ভিক্ষু সেই ভীষণ দুর্গমপথ