পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७8२ বিভূতি-রচনাবলী বেশ আড়া। খুব ভালো লাগলো আমার। আমি ভাবলুম, কাছে, মাঝে এক আধ শনিবার কলকাতা থেকে এখানে এসে এই আড্ডায় যোগ দিয়ে গেলে কলকাতা বাসের একঘেয়েমিট কেটে যায়। কলকাতায় ফেরবার ট্রেনের সময় প্রায় হল । আমরা ওদের সকলের কাছে বিদায় নিলাম। গুরুমশায়টি সত্যিই বড় ভদ্র, তিনি উঠে এলেন আমাদের সঙ্গে আমাদের স্টেশনের রাস্তায় তুলে দিতে। —আসবেন আবার—কেমন তো ? বড় কষ্ট হল আপনাদের— —কি আর কষ্ট—খুব আনন্দ পেয়েচি । আমি তাহলে— থানিকট চলে এসেচি—দেখি গুরুমশায় পেছন থেকে আবার ডাকচেন । নীরদ বললে --ছাতি ফেলে এসে নি তো ? —না, ছাতি আনিই নি— গুরুমশায় ইপাতে ইপিাতে আসচেন পথের বঁাকে । —একটা ভুল হয়ে গিয়েচে—আপনাদের ঠিকানাটা ? যদি মেয়েটার বিয়ে টিয়ে দিতে পারি মশায়দের চিঠি লিখবো, আসবেন আপনারা। বড় খুশী হবো। বড় ভালো লেগেচে আপনাদের । ট্রেনে উঠে নীরদ বললে, বেশ বেড়ানো হল, না ? —বেশই তো । —গুরুমশায়ের মেয়েটি বেশ—কি বল ? তোমাদের পালটি ঘর তো—ন ? —সে খোজে তোমার দরকার কি ? —তাই বলছিলাম। গরিবের মেয়েটি উদ্ধার করা রূপ মহৎ কাজে— —কি বাজে কথা বলচো সব ! থাকু ওকথা। এরপরে আমরা আর কখনো ওই গ্রামে অবিহি যাইনি–কিন্তু পাচ ছ বছর পরে বৌবাজারে এক দরজির দোকানে একজন লোকের সঙ্গে আমার আলাপ হয়, তার বাড়িও জাঙ্গিপাড়া। কথায় কথায় তাকে তাদের বৃদ্ধ গুরুমশায়ের কথা জিজ্ঞেস করে জানি তিনি এখনও বেঁচে আছেন, মেয়েগুলির মধ্যে বড়টিকে অতিকষ্টে পার করেচেন কিন্তু অন্ত মেয়েগুলির আজও কোনো কিনীরা করতে পারেননি। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হলে জীবন সম্বন্ধে—পাড়াগায়ে পায়ে হেঁটে বেড়ানো উচিত কিছুদিন, আমার এইরকম ধারণা। দশদিন কাশ্মীরে ঘুর্ণীঝড়ের মতো ঘুরে আসার চেয়ে তা কম শিক্ষাপ্রদ নয়, আননাও তা থেকে কম পাওয়া যায় না। এই ধরনের আর একটা অভিজ্ঞতার কথা এবার বলবো । 緩 পিসিমার বাড়ি যাচ্ছিলাম পায়ে হেঁটে । ১৯২৯ সালের জ্যৈষ্ঠ মাস। গ্রীষ্মের ছুটিতে তখন আমি আছি স্বগ্রামে। অাম বট তেঁতুলের ছায়াভরা গ্রাম্য পথ। যে গ্রামে যাবো সেখানে এর আগে একটিবার মাত্র গিয়ে