পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভিযাত্রিক *A) ভাঁজ খেতে হবে। তারপর গুড়ি কচুর তরকারি, কিন্তু তাতে এত সাংঘাতিক কাল দেওয়া ঘে আমার পক্ষে তা খাওয়া সম্ভব হল না। খাওয়ার পর্ব এখানেই শেষ । রাত্রে পাওঁঠাকুর আমার কাছে বসে নানারকম কথা বলছিলেন। আমি কলকাতা থেকে যখন এসেচি, তখন তাদের কাছে যেন কোনো অদৃষ্ট-পূর্ব জীব। ব শকাংtয় যারা বাস করে, তারা সবাই খুব বিদ্বান আর খুব ধনী। বোধ হয় আমি কোনো ছদ্মবেশী ক্রোড়পতি হবে। আমার বললেন, আপনি কলকাতায় কোন জায়গায় থাকেন ? —শেয়ালদ’র কাছে । —কোথায় কাজ করেন বাৰু ? —কেশোরাম পোদ্ধারের আপিসে । —কতটাকা মাইনে পান ? —তিনশো টাকা । কথার মধ্যে সত্য ছিল না। মাইনে পেতুম পঞ্চাশ টাকা। —বাবু বেশ বড়লোক। আমি বিনীত হান্তের সঙ্গে মাথা নীচু করে রইলাম। —বাবুর কি কলকাতায় বাড়ি ? -ਂ ! —ক-খানা বাড়ি আছে ? —তা আছে থান পাচেক। ভাড়াও পাই মাসে মাসে প্রায় তিনশে টাকা । —উঃ ! আমার মুখে পুনরায় লজ্জা ও বিনয়ের হাস্তরেখা ফুটে উঠলো। —বাবু, আপনি যখন আমার বাড়ি এলেন, তখন আপনার চাল-চলন ধরন-ধারন দেখে আমার স্ত্রী বলেছিল,এই বাবুখুব বড়লোকের ছেলে। আমরা বাবু,দেখলেই মানুষ চিনতে পারি। লে বিষয়ে অবিপ্তি কোনো সন্দেহ রইল না । —বাবু, আপনি বিয়ে করেচেন ? —ও, কোন কালে। তিন চারটি ছেলেমেয়ে হয়ে গেল। —তাহলে খুব অল্প বয়সে আপনার বিয়ে হয়েছিল ? —ই, তখন আমার বয়স আঠারো। আমার শ্বশুর একজন বড়লোক। কলকাতায় মস্ত ব্যবসা । —তা তো হবেই বাবু, তা আপনি যখন আমার যজমান হলেন, যদি কথনে কলকাতার বাই, আমার একটা থাকবার জায়গা হল। . —নিশ্চয়। আমার বাড়িতে গিয়েই দয়া করে উঠবেন। পাওঠাকুর আমার কথায় খুশী হয়ে তার স্ত্রীকে ডেকে বললেন—ওগো শোনে, বাবুকি বলচেন ।