পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8yや বিভূতি-রচনাবলী —সত্যিই তাই মনে হয়েচে আপনার নাকি ? —মনে হয়েচে তো বটেই—আমি সে কথা শুধু মুখে বলচিনে, একদিন লিখবো। —আপনার লেখাটেথা আছে ? —ইচ্ছে করে লিখতে, তবে লিখিনি কখনো । আপনাদের এই আদর-আপ্যায়ন কোনোদিন ভুলবো না, একথা আমার মনে রইল—সুবিধে হলে মুযোগ পেলে লিখবোই। র্তারা সবাই মিলে আমার বন্ধুর নানারকম মুখ্যাতি করলেন আমার কাছে। হেডমাস্টার বাবুর ইংরেজি প্রায় সাহেবের মতো—এমন ইংরজি বলবার বা লিখবার লোক তারা কখনো দেখেন নি—ইত্যাদি। পরদিন আমি সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওখান থেকে চলে এলুম। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করি, আমার এই বন্ধুটি তারপর ওখানকার কাজ ছেড়ে দিয়ে বি টি পড়তে আসেন কলকাতায় এবং ভালো করে বি টি পাস করে কি রকম কি যোগাযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তিলাভ করে বিলেত যান। বর্তমানে ইনি শিক্ষাবিভাগের একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী। বছর-দুই পরের কথা । ভাগলপুরে বড় বাসা’ বলে খুব বড় একটা বাড়িতে থাকি, কার্যোপলক্ষে, কেশোরামজীর চাকরি তখন অনেকদিন ছেড়ে দিয়েচি । ‘বড় বাসা'তে অন্ত কেউ থাকে না—আমি চাকর-বাকর নিয়ে বাস করি, গঙ্গার একেবারে ঠিক ধারেই, ছাদের ওপর থেকে মুঙ্গেরের পাহাড় দেখা যায়। দিনরাত হু-হু খোলা হাওর বয়, ওপারে বিশাল মুক্ত চরভূমি—দিনে স্বর্যালোকে মরুভূমির মতো দেখায়, কারণ এসব দেশের চর বালুময় ও বৃক্ষলতাহীন, আবার রাত্রের জ্যোৎস্নালোকে পরীর দেশের মতো স্বপ্নময় হয়ে ওঠে। একদিন লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানলুম কাছে অনেক সব দেখবার জিনিস আছে। আমার বন্ধু সুগায়ক হেমেন্দ্রলাল রায়কে একদিন বললুম, চলে হে, কোথাও একদিন বেরিয়ে श्रांगां शांक হেমেন vদ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ভ্রাতুপুত্র, এখানেই ওদের বাড়ি। আমার সঙ্গে খুব আলাপ হয়ে গিয়েছিল, বড় বাসার ছাদে বসে আমরা দুজনে প্রায়ই আড্ডা দিতাম রাত্রে। হেমেন ধেতে রাজি হয়ে গেল। কিন্তু কোথায় যাওয়া যায় ? আমার শোনা ছিল কাজরা ভ্যালি খুব চমৎকার বেড়াবার ও দেখবার জায়গা, ওখানে ঋষ্যশৃঙ্গ মুনির আশ্রম বলে একটা গ্রানাইট পাহাড়ের গুহা বৌদ্ধযুগের চিহ্ন পাওয়া যায়। হেমেন ও আমি দুজনে বেরিয়ে পড়লুম একদিন সকালের ট্রেনে। জামালপুরে গিয়ে পুরী ও জিলিপি কিনে নেওয়া গেল, সারাদিন খাবার জন্তে । বনজঙ্গলে চলেচি, খাদ্যসংস্থানের যোগাযোগ আগে দরকার।