পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88९ বিভূতি-রচনাবলী দুজনে আবার পথে উঠলুম। সবে সূর্যোদর হচ্চে—ডানদিকে কাকোরারা স্টেটের অনুচ্চ শৈলশ্রেণী, মাঝে মাঝে শালবন। প্রভাতে মুক্ত বায়ুতে জীবনের জয়গান ঘোষণা করচে। পথের নেশায় মন প্রাণ উত্তেজিত হয়ে উঠেচে–কোথায় মানার হিল আর কোথায় ভাগলপুর। প্রায় ছ মাইল পথ হাটবার পরে একটা ছোট পাহাড়ী নদী পার হতে হল। উপলরাশির উপর দিয়ে ঝির বির করে নির্মল জলের ধারা বয়ে চলেচে। নদীর দু পাড়ে ছোট ছোট কি ঝোপে মুন্দর ফুল ফুটেচে। নদী পার হয়ে আরও মাইল-পাচেক পথ হেঁটে এসেচি ; একজন বিহারী ভদ্রলোক আমাদের পাশ দিয়ে টমটম চড়ে যেতে যেতে আমাদের দেখে গাড়ি থামালেন । আমার বন্ধুকে নমস্কার করে হিন্দীতে বললেন—আপনি কোথা চলেচেন এ ভাবে ? অম্বিক বললে—বেশ ভালো আছেন নদীয়ার্চাদবাবু ! নমস্কার। দেওঘর চলেচি– –পীয়ে হেঁটে ? মান্দার হিল থেকে ? —সোজা ভাগলপুর থেকে। কাল বাকাতে রাত কাটিয়েচি—ইনি আমার বন্ধু অমুক— ইনিও যাচ্চেন— ভদ্রলোক টমটম থেকে নেমে পড়লেন। আমাদের দুজনকে বিশেষ অনুরোধ করলেন র্তার টমটমে উঠতে। আমার বন্ধু ও আমি দুজনেই বিনীতভাবে বললুম, যখন হেঁটে চলেচি, শেষ পর্যন্ত হেঁটেই যাবো। কেউ দেখচে না বলে এখানে খানিকটা গাড়িতে উঠে শেষে ভাগলপুরে ফিরে পারে হেঁটে যাওয়ার বাহাদুরি নেওয়া আমাদের ধাতে সইবে না। তিনি বললেন—তীর্থ করতে যাচ্চেন নাকি ? আমরা তাকে আশ্বস্ত করলুম। পুণ্য অর্জনের লোভ নেই আমাদের। যাচ্চি এমনিই | }%t«سه তিনি বললেন—খাওয়া-দাওয়া করবেন এবেলা আমার ওখানে । জামদহ ডাকবাংলোতে আমি কাছারি করবো এবেলা। আমি আগে চলে যাই, কিছু মনে করবেন না। আপনাদের পথের ধারেই পড়বে জামদহ বাংলো। সেখানে আপনাদের পৌছতে আরও ঘণ্টা-দুই লাগবে। আমি লোক দাড় করিয়ে রাখবো। ভদ্রলোক টমটমে উঠে গেলেন। অম্বিক বললে—উনি বাৰু নদীয়াৰ্চাদ সহায়। লছমীপুর স্টেটের ম্যানেজার। বড় ভালো লোক। আমার সঙ্গে খুব আলাপ আছে। ভালোই হল, দুপুর ঘুরে গেলে আমরা জামদহ পোঁছবো, সেখানে খাওয়া-দাওয়া করা যাবে এখন। বেলা প্রায় বারোটার সময়ে আমরা দূর থেকে একটা শালবন দেখতে পেলুম পথের ধারেই। অম্বিক বললে, ওর মধ্যেই জামদহ ডাকবাংলো—নদীয়াৰ্চাদবাবু বলেছিলেন। আমাদের জন্তে পখের ওপর লোক দাড়িয়ে ছিল। সে আমাদের বাংলোতে নিয়ে গেল ।