পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8b心 বিভূতি-রচনাবলী একজন বৃদ্ধ বললে—এমন গ্রাম নেই, যেখান থেকে বছরে স্ব-চারটে গোরু-বাছুর লা নেয়, মাছুষও নেয় মাঝে মাঝে । —বাঘ ছাড়া আর কি জানোয়ারের উৎপাত আছে ? —বাঘের পরেই বুনো মহিষের উপদ্রব। ফসল বড় নষ্ট করে দেয় এরা। —তোমরা কি কর তখন ? —আমরা আগুন জালি, টিন বাজাই—সারা রাভ জাগঙে হয় ক্ষেতের মধ্যে মাচা বেঁধে । —বাঘ মারো না ? —বাবু, সবাই শিকারী নয় তো, বাঘ শিকার করা সহজ নয়। যখন বড্ড উৎপাত হয়, তখন অন্ত জায়গা থেকে শিকারী ড়েকে আনতে হয়। —তীরধচুক দিয়ে বাঘ শিকার করে ? —চিরকাল তাই হয়ে এসেচে, যখন কিছুতেই ন পারা যায়, তখন বন্দুকওয়ালা সাহেব শিকারীকে আনাতে হয়। ভাও একবার এমনি ভুল, সাহেব শিকার করতে গিয়ে বাঘের হাতে জখম হল, শহরের দাওয়াইখানায় নিয়ে যেতে যেতে পথেই মারা পড়লো। —বড় সাপ দেখেচ কখনো 7 আছে এ বনে ? --বড় মরাল সাপ আছে, তবে তাদের বড় একটা দেখা যায় না, পাহাড়ের গুহায় কিংবা গাছের খোড়লে লুকিয়ে থাকে। একবার আমি একটা দেখেছিলুম। অনেকদিন আগের কথা, তখন আমার জোয়ান বয়স, পাহাড়ের ধারে ছাগল চরাতে গিয়েচি এমন সময় একটা ছাগল হঠাৎ বা ব্যা করে ডাকতে লাগলো কোন দিক থেকে। অনেক ছাগল এদিকেওদিকে মাঠের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েচে, প্রথমটা তো বুঝতে পারিনি কোথা থেকে ডাক আসচে— —ভারপর ? * —তারপর দেখি এক জায়গায় একটা বাবলা গাছ আছে, তার তলায় সামান্ত একটু জায়গায় লম্বা ঘাসের বন, সেই বনটার মধ্যে থেকে ছাগলের ডাক আসচে। ব্যাপার কি দেখতে গেলুম। গিয়ে দেখি এক ভীষণ অজগর সাপ ছাগলটার পেছন দিকের দ্বখানা ঠ্যাং একেবারে গিলে ফেলেচে। বাবলা গাছের গুড়িতে সাপট জড়িয়ে ছিল, একবার একটু একটু করে পাক খুলচে। তখন আমি ছাগলের সামনের পা ধরে টানাটানি আরম্ভ করতেই সাপটা আর পাক না খুলে গাছের গুড়ি এমন জড়িয়ে এঁটে ধরলে যে আমি জোর করেও ছাগলটাকে ছাড়িয়ে নিতে পারিনে। মরাল সাপের গায়ে ভীষণ জোর। তখন গ্রাম থেকে লোক ডেকে নিয়ে গিয়ে সাপট মেরে ফেলি। দামুণ্ডি ছাড়িয়ে মাইল দশেক হেঁটে আমি অমর-কন্টক রোড স্টেশনে এসে ট্রেন ধরে কলকাতার ফিরলুম। & ১৯৩৩ সালে খবরের কাগজে বার হল ৰে উড়িয়ার অন্তর্গত সম্বলপুর জেলার বিক্রমখোল