পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভিযা द्धिक 8bや নামক স্থানে ঘন অরণ্যের মধ্যে একটা পাহাড়ের গায়ে প্রাগৈতিহাসিক যুগের শিলালিপি আবিষ্কৃত হয়েচে । অনেক লোক দেখতে যাচ্চে এবং স্থানীয় পুলিলে লোকজন যাবার অনেক মুবিধে করে দিয়েচে । এ-কথাও কাগজে বেরিয়েছিল, স্থানটির প্রাকৃতিক দৃশ্ব বড় মুনার এবং হরিণ, বনমোরগ, সম্বর প্রভৃত্তি বন্যজন্তু যথেষ্ট পাওয়া যায়। বন্ধুবর শ্ৰীযুক্ত সজনীকান্ত দাস তখন ‘বঙ্গলী'র সম্পাদক। সজনীবাবু আমাকে ‘বঙ্গশ্ৰী'র তরফ থেকে বিক্রমখোল পাঠাতে সক্ষত হলেন—সঙ্গে যাবেন বঙ্গীর তৎকালীন সহকারী সম্পাদক শ্ৰীযুক্ত কিরণকুমার রায় ও ফটোগ্রাফার হিসাবে বন্ধুবর শ্ৰীযুক্ত পরিমল গোস্বামী। খ্যাতনামা ব্যারিস্টার শ্ৰীযুক্ত নীরদরঞ্জন দাসগুপ্তের মধ্যম ভ্রাতা প্রমোদরঞ্জনও আমাদের সহযাত্রী হবেন ঠিক হল । ৩রা মার্চ শুক্রবার আমরা হাওড়া স্টেশন থেকে নাগপুর প্যাসেঞ্জারে রওনা হবো ধার্য ছিল। এদিন বেলার তিনটের সময় আমি “বঙ্গশ্ৰী' আপিসে গিয়ে কিরণ ও পরিমলবাবুকে তাগাদ দিলাম। পরিমলবাবু ক্যামের ও জিনিসপত্র নিয়ে সেখানে আমার অপেক্ষাতেই বসে ছিলেন। আমি বললুম—আপনারা রওনা হয়ে যাবেন সাতটার সময়ে, হাওড়া স্টেশনে বি. এন. আর-এর ইন্টার ক্লাস টিকিটঘরের সামনে দাড়িয়ে থাকবেন, যতক্ষণ আমি না যাই । প্রমোদবাবুকেও ফোন করে সে কথা জানানো হল। বনজঙ্গলের পথে কয় বন্ধুতে মিলে একসঙ্গে যাবে, মনে যথেষ্ট উৎসাহ ও আনন্দ । নির্দিষ্ট সময়ে হাওড়া স্টেশনে গিয়ে দেখি শুধু কিরণবাবু দাড়িয়ে আছেন টিকিটঘরের সামনে। ট্রেন ছাড়তে মিনিট কুড়ি মাত্র বাকি— আমাদের দুজনেরই মন দমে গেল। বন্ধুরা সব একসঙ্গে গেলে যে আনন্দ হবার কথা, দুজনে মাত্র গেলে সে আননা পাওয়া যাবে না। অনেকবার এ-রকম হয়েচে, যারা যারা যাবে বলেচে কোথাও, শেষপর্যন্ত তাদের অধিকাংশই আসেনি। কিরণবাবু বললেন-টিকিট করে চলুন আমরা আগে গিয়ে জায়গা দখল করি। নাগপুর প্যাসেঞ্জারে বেজায় ভিড় হয়, আমরা সবাই তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রী, সুতরাং কথাটার মধ্যে যুক্তি ছিল। গাড়িতে উঠে আমরা বেপরোয় ভাবে চারজনের জন্তে চারখানা বেঞ্চিতে বিছানার চাদর, গারের কাপড় ইত্যাদি পেতে জায়গা দখল করলুম। তারপর কিরণবাবুকে পাঠিয়ে দিলুম বাকি দুজনের খোজে। গাড়ি ছাড়বার মিনিট দশেক আগে ছুটতে ছুটতে সবাই এসে হাজির। পরিমলবাবু শেষ মুহূর্তে তার ক্যামেরার জন্তে কি একটা জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন—তাই দেরি হল। একজন রেলওয়ে কর্মচারী বলে গেল—এ গাড়ি সিনি জংশন হয়ে যাবে। আমরা বললুম—মশাই, বেলপাহাড় যাবে তো ? বেলপাহাড় বছরের স্টেশন। লোকটি খোজ রাখে না, নামও শোনেনি। বললে— সে কতদূরে বলুন তো? বিলাসপুরের এদিকে ? --অনেক এদিকে, বার্গগুডার পরে।