পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২. বিভূতি রচনাবলী দু'বছর আপনাকে দেখে আসছি দাদা, আমার বুঝতে বাকী নেই, আপনার শরীরে মায়া ब्र कध । —কম —বা রে—এ তে তুমি—আমি বুঝি— --দাড়ান, দেখি গিয়ে মিশির ঠাকুর কি করছে—তাড়া না দিলে সে কি আর— নির্মলার মা যাইবার সময় চোখের জল ফেলিলেন । কিন্তু নির্মলা বাড়ির মধ্যে কি কাজে ব্যস্ত ছিল, মায়ের বহু ডাকাডাকিতেও সে কাজ ফেলিয়া বাহিরে আসিতে পারিল না। অপু স্টেশনের পথে ধাইতে যাইতে ভাবিল—নির্মলা আচ্ছা তো ! একবার বার হ’ল না—যাবার সময়টা দেখা হ’ত—আচ্ছা খামখেয়ালি ! যখন তখন রেলগাড়িতে চড়াটা ঘটে না বলিয়াই রেলে চড়িলেই তাহার একটা অপূর্ব আনন্দ হয়। ছোট তোরঙ্গ ও বিছানাটার মোট লইয়। জান’লার ধারে বসিয়া চাহিয়া দেখিতে দেখিতে কত কথা মনে অসিতেছিল ! এখন সে কত বড় হইয়াছে—একা একা ট্রেনে চড়িয়া বেড়াইতেছে। তারপর এমনি একদিন হয়ত নীল নদের তীরে, ক্লিওপেট্রার দেশে —এক জ্যোৎস্না রাতে শত শত প্রাচীন সমাধির বুকের উপর দিয়া অজানা সে যাত্ৰা ! স্টেশনে নামিয়া বাড়ি যাইবার পথে একটা গাছতলা দিয়া যাইতে যাইতে মাঝে মাঝে কেমন একটা মুগন্ধ—মাটির, ঝরা পাতার, কোন ফুলের। ফান্ধনের তপ্ত রৌদ্র গাছে গাছে পাতা ঝরাইয়া দিতেছে, মাঠের ধারে অনেক গাছে নতুন পাতা গজাইয়াছে—পলাশের ডালে রাঙা রাঙা নতুন ফোটা ফুল যেন আরতির পঞ্চপ্রদীপের উধ্বমুখী শিখার মত জলিতেছে। অপুর মন যেন আনন্মে শিহরিয় ওঠে—যদিও সে ট্রেনে আজ সারা পথ শুধু নির্মলা আর দেবব্রতের কথা ভাবিয়াছে’-কখনো শুধুই নির্মলা, কখনো শুধুই দেবব্রত—তাহার স্কুলজীবনে এই দুইটি বন্ধু যতটা তাহার প্রাণের কাছাকাছি আসিয়াছিল, অতটা নিকটে আমনভাবে আর কেহ আসিতে পারে নাই, তবুও তাহার মনে হয় আজকার আনন্দের সঙ্গে নির্মলার সম্পর্ক নাই, দেবব্রতের নাই—আছে তার নিশ্চিন্দিপুরের বাল্যজীবনের স্নিগ্ধস্পর্শ, আর বহুদূর-বিসপিত, রহস্তময় কোন অস্তরের ইঙ্গিত—সে মনে বালক হইলেও এ-কথা বোঝে। প্রখম যৌবনের শুরু, বয়ঃসন্ধিকালে রূপ ফাটিয়া পড়িতেছে,—এই ছায়া, বউলের গন্ধ, বনাস্তরে অবসন্ন ফাঙ্কনদিনে পাখির ডাক, ময়ুরকষ্ঠ রং-এর আকাশটা—রক্তে যেন এদের নেশা লাগে—গর্ব, উৎসাহ, নবীন জীবনের আনন্দভরা প্রথম পদক্ষেপ। নির্মলা তুচ্ছ! আর এক দিক হইতে ডাক আসে—অপু আশায় আশায় থাকে। নিরাবরণ মুক্ত প্রকৃতির এ আহবান, রোমান্সের আহবান—তার রক্তে মেশানো, এ আসিয়াছে তাহার বাবার নিকট হইতে উত্তরাধিকারসূত্রে–বন্ধনমুক্ত হইয়া ছুটিা বাহির হওয়া, মন কি চার নাবুঝিয়াই তাহার পিছু পিছু দৌড়ানো, এ তাহার নিরীহ শান্ত-প্রকৃতি ব্রাহ্মণপণ্ডিত পিতামহ রামহরি শুর্কালঙ্কারের দান নয়—যদিও সে তার নিম্পূহ জ্ঞানপিপাসা ও অধ্যয়নপ্রিয়তাকে লাভ করিয়াছে বটে। কে জানে পূর্ব-পুরুষ ঠ্যাঙাড়ে বীর রায়ের উচ্ছম্বল ब्रख् किङ्ग आँप्छ कि-न- .'